সিলেটের বিয়ানীবাজারে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পানিতে লাফিয়ে নিখোঁজের পর দুলাল আহমদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ তাকে পানিতে ফেলে বাঁশ ও লগি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি তদন্তে পুলিশের তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
তিনি বলেন, ৩০ মে সোমবার বিকেলে গঠিত কমিটিতে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) শাহরিয়ার বিন সালেহকে প্রধান করা হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) জাকির হোসাইন ও জেলা পুলিশের পরিদর্শক উত্তম কুমার পালকে সদস্য করা হয়েছে।
রোববার (২৯ মে) সকাল ১০টার দিকে সিলেটের বিয়ানীবাজারের পিরেরচক এলাকার কদমআনি বিল থেকে দুলালের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার (৩১ মে) সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বিয়ানীবাজারের পীরেরচক এলাকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও নিহত দুলাল আহমদের বাড়িতে গিয়ে তার মাসহ পরিবারকে সান্ত্বনা দেন।
এ সময় তাদের আশ্বস্ত করে পুলিশ সুপার বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত এ মৃত্যুর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। পুলিশ যদি অপরাধী প্রমাণ হয়, তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে পুলিশের তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিলপাড়া ইউনিয়নের পীরেরচক এলাকা পরিদর্শনকালে এসপি ফরিদ উদ্দিন গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর দুলাল আহমদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পীরের চক বাজারে গ্রামবাসীর আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন তিনি।
এ সমাবেশে গ্রামবাসীর পক্ষে গ্রামের দুই প্রতিনিধি গত শনিবার বিকেলে ঘটে যাওয়া পুরো চিত্র পুলিশ সুপারের সামনে তুলে ধরেন এবং দুলাল হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানান।
সভায় বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসপি মিডিয়া) লুৎফুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) জাকির হোসাইন, তিলপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, শিক্ষাবিদ মজির উদ্দিন আনছার ও সাবেক চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পীরেরচক বাজারে গ্রামবাসীর সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি তদন্ত শেষ না পর্যন্ত বলা যাবে না। ঘটনার তদন্তে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। ওয়ারেন্ট তামিল করতে গিয়ে তারা অতিরঞ্জিত কিছু করেছে কিনা এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
ছামির মাহমুদ/এফএ/জেআইএম