বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বাগানের ছায়ায় বসে ক্লাস করছে কোমলমতি শিশুরা। শিক্ষকদের কেউ দাঁড়িয়ে আবার কেউ বসে শিশুদের ক্লাস নিচ্ছেন। অন্যরা কেউ গাছের নিচে আবার কেউ ছায়ায় বসে তাদের ক্লাসের সময় হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
এটি কোনো ভ্রাম্যমাণ বা ভাসমান স্কুলের চিত্র নয়। বুধবার (৮ জুন) পটুয়াখালীর কুয়াকাটার ১৫৯ নম্বর পাঞ্জুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সিকদার বাড়ির বাগানে এ চিত্র দেখা গেছে।
মাথার ওপরে টিনের চাল থাকায় অসহনীয় গরমে ক্লাস করার সময় শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বমি, মাথাব্যথা, ছটফট করাসহ নানা সমস্যায় ভোগে কোমলমতি শিশুরা। এ অবস্থায় পাঠদানের জন্য বাগানকেই বেছে নিয়েছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা জানান, সকাল ৯টায় স্কুলে ক্লাস শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তীব্রতা বাড়লে শিক্ষার্থীদের নিয়ে পাশের বাগানবাড়ির ছায়ায় ক্লাস করতে বাধ্য হন তারা।
ছায়ায় বসে ক্লাসের জন্য অপেক্ষা করছিল তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী এলমা জাহান। সে জাগো নিউজকে বলে, ‘কিছুক্ষণ পরে আমাদের ক্লাস শুরু হবে। তাই এখানে বসে আছি। স্কুলে অনেক গরম তাই আমরা বাগানে ক্লাস করি। এখানে অনেক বাতাস, ক্লাস করতে ভালো লাগে।’
তৃতীয় শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী সানজিদা বলে, ‘গরমে স্কুলের মধ্যে থাকলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। কারো মাথাব্যথা, কারো বমি হয়। তাই স্যারেরা এখানে নিয়ে আসছে।’
স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাকসুদ বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকালে ক্লাস শুরুর পর কিছুক্ষণ স্কুলে ক্লাস করাতে পারি। কিন্তু বেলা ১১টার দিকে প্রচণ্ড গরম পড়া শুরু হলে ওদের বাগানে নিয়ে আসি, যাতে স্বাস্থ্যটা ঠিক থাকে আর সুন্দরমতো পাঠদান করা যায়।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে এম মনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্তমানে অত্যন্ত গরম পড়ায় বাচ্চারা-শিক্ষকরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই বাধ্য হয়ে ওদের নিয়ে বাগানে নেমেছি। আমাদের স্কুলটির ওপরে টিন থাকায় এ সমস্যা হচ্ছে। স্কুলের বহুতল ভবনের কাজটি দ্রুত শুরু করা গেলে এ সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যেতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রায় ১০ দিন ধরে এভাবে ক্লাস করাচ্ছি। তবে যেসব জায়গায় এরকম স্কুল রয়েছে কিন্তু কোনো ছায়ার ব্যবস্থা নেই, সেসব স্কুলের শিক্ষার্থীদের সুস্থ রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসআর/জিকেএস