দেশজুড়ে

মৌলভীবাজারের পর্যটনখাতে সিলেটের বন্যার প্রভাব

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি মৌলভীবাজার। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের কাছাকাছি থেকে যারা ঈদের ছুটি উপভোগ করতে চান তাদের জন্য এ জেলায় রয়েছে বেশকিছু দর্শনীয় স্থান। তবে সিলেটের চলমান বন্যায় মৌলভীবাজারের পর্যটনখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত বছরগুলোতে ঈদের কয়েকদিন দিন আগে থেকে হোটেল-মোটেলে বুকিং শুরু হয়ে যেত। কিন্তু এ ঈদে এখনো তেমনটা লক্ষ করা যাচ্ছে না। যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে জেলার পর্যটনখাত।

করোনার কারণে গত দুইবছর ঈদের ছুটিতে পর্যটন স্পট বন্ধ থাকার পর এবছর গত ঈদুল ফিতরে খুলে দিলে পর্যটকের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। জেলার পর্যটন স্পটগুলো ঈদুল আজহার ছুটিতেও পর্যটকদের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। কিন্তু এখনো হোটেল-মোটেলে বুকিং শুরু হয়নি। তাই পর্যটক আগমনে শঙ্কায় রয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা সিলেট এবং মৌলভীবাজার একসঙ্গে ঘুরতে আসেন। কিন্তু এবার সিলেট ও মৌলভীবাজারের একাংশে বন্যা থাকায় অনেকেই আসতে চাচ্ছেন না। দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতি ও কোরবানির বাড়তি খরচও পর্যটক না আসার অন্যতম কারণ।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, খাসিয়া পল্লী, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর, দেশের সর্ববৃহৎ জলপ্রপাত মাধবকুণ্ড, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, ছায়া নিবিড় পরিবেশে অবস্থিত নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, শ্রীমঙ্গলের নীলকণ্ঠের সাত রংয়ের চা, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান, চা গবেষণা কেন্দ্র, কুলাউড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ি, মুরইছড়া ইকোপার্ক, গগণ ঠিলা, দোলনচাঁপা ইকোপার্ক, মৌলভীবাজার সদরের বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক, মুন ব্যারেজ, রাজনগরের মাথিউরা চা বাগান লেক, কমলারানীর দিঘীসহ বিভিন্ন চা বাগান এবং এখানকার বাসিন্দাদের জীবনধারা ও সংস্কৃতি এই জনপদ যে কোনো পর্যটকদের আকর্ষণ করে।

শ্রীমঙ্গল টি রিসোর্ট মিউজিয়ামের কর্মচারী শামছুদ্দোহা জাগো নিউজকে বলেন, এবারের ঈদে পর্যটকদের এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সিলেটে বন্যার নেতিবাচক প্রভাবে পর্যটকরা আসছেন না।

ঢাকার ট্যুরিস্ট গাইডের সদস্য আফতাব আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, কোরবানির বাড়তি খরচ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বন্যার প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পর্যটকরা সিলেট যেতে কোনো যোগাযোগ করেননি।

মৌলভীবাজার পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল গ্রিনলিফ রিসোর্টের সত্ত্বাধিকারী এস কে দাস সুমন বলেন, সিলেটের বন্যার কারণে মৌলভীবাজারের পর্যটনখাতে ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। পর্যটকরা মনে করছেন, পুরো সিলেট বিভাগ বন্যা আক্রান্ত তাই এবছর মৌলভীবাজারেও পর্যটক আসতে চাচ্ছে না। গত ঈদের ছুটিতে সাত-আটদিন আগে হোটেল-মোটেলে বুকিং শেষ হয়ে যেত। কিন্তু এবছর এখনো বুকিং শুরু হয়নি।

আব্দুল আজিজ/এমআরআর/জেআইএম