বিয়ের দাবিতে পাঁচ দিন ধরে প্রেমিক নিপুনের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া তরুণী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তরুণী থানা হেফাজতেই রয়েছেন।
সোমবার (২৫) দুপুরে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরন্নাহার শাহজাদী থানায় এসে ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯ জুলাই থেকে প্রেমিক নিপুনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন তরুণী (২১)। তবে ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে টাকার বিনিময়ে মেয়েটিকে বাড়ি চলে যেতে বললেও যাননি।
এদিকে ২৩ জুলাই দিনগত রাতে বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের এক শিক্ষকের মেয়েকে (২২) বিয়ে করে এলাকা থেকে সটকে পড়েন প্রেমিক নিপুন (২৩)।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে নিপুনের মামা কনকের মাধ্যমে নীলফামারী কলেজে আমার পরিচয় ঘটে। এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পড়াশোনার কারণে এক সময় আমরা দুজন ঢাকা যাই। ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আমরা দুজনে ঢাকার লোকনাথ মন্দিরে বিয়ে করি। বিয়ের সময় নিপুনের বান্ধবী ও তার স্বামী উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের পর নিপুনের এক বান্ধবীর বাসায় আমরা এক সপ্তাহ অবস্থান করি। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় আমরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রাত যাপন করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ের বিষয়টি চাকরি না হওয়া পর্যন্ত আমাকে গোপন রাখতে বলেছিল নিপুন। কিন্তু কিছুদিন থেকে সে আগের মতো আর যোগাযোগ রাখছিল না। তাই তাকে ফোন দিয়েই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি তার বাড়িতে চলে আসি। এখানে এসে নিপুনের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ির লোকজন ভালো ব্যবহার করলেও তারা আমার ফোনটি রেখে দেয়।’
তরুণীর দাবি, ‘নিপুনের পরিবার চাচ্ছে আমি এখান থেকে চলে যাই। তারা আমার পরিবারকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছে। তবে আমার পরিবার রাজি হয়নি। শুনেছি সে নাকি অন্য প্রেমিকাকে বিয়ে করেছে। কথাটা সত্য কি না জানি না। তবে সে অন্য মেয়েকে বিয়ে করলেও আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে হবে। আমি যদি স্ত্রীর মর্যাদা না পাই তাহলে আত্মহত্যার পথ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।’
নিপুন রায়ের বাবা বাবু ভূপেষ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে মেয়েটি আমার বাড়িতে ছিল। রোববার রাতে থানা পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।’ বোড়াগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিমুন জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে মেয়েটি থানা হেফাজতে রয়েছে।
ডোমার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ঠাকুর দাস জাগো নিউজকে বলেন, রাতে মেয়েটি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ওসি বাইরে আছেন। তিনি না আসা পর্যন্ত কোনো কিছু বলা সম্ভব না। বর্তমানে মেয়েটি পুলিশ হেফাজতে আছে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরন্নাহার শাহজাদী জাগো নিউজকে বলেন, মেয়েটির সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের তো কোনো সেফ হোম নেই। তাই মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না।
এসজে/জিকেএস