একটা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার একেবারে দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। যে কোন খেলা কিংবা যে কোন পর্যায়ের বিশ্বকাপ হোক, সেই ইতিহাস গড়ার সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। রাত পোহালেই যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মেহেদী হাসান মিরাজরা মুখোমুখি হচ্ছে নেপাল যুব ক্রিকেট দলের। নেপালকে হারাতে পারলেই ইতিহাস গড়ে ফেলবে মেহেদী হাসান মিরাজরা। মুশফিক, সাকিব, তামিম কিংবা আশরাফুল-আফতাব-সৈয়দ রাসেলরা যেটা পারেননি, সেটাই পেরে যাবেন মিরাজরা। এর চেয়ে গৌরবের আর কী হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, কোয়ার্টার ফাইনালে যখন প্রতিপক্ষ নেপাল, তখন সেমিতে এক পা দিয়ে ফেলেছে বলেই ধরে নিচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু এ দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা যখন অতীত ইতিহাসের দিকে তাকাবেন, তখন তাদেরকে দারুন হতাশই হতে হবে। কারণ, ইতিহাস যে কথা বলছে নেপালের পক্ষেই! অনুর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে একবারই যে হিমালয়ের পাদদেশের দেশটির মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ এবং ওই একবার পরাজয়ের স্বাদ নিয়েই ফিরতে হয়েছে আশরাফুলেদের নিয়ে গড়া দলটিকে।ঘটনাটা ২০০২ সালের। শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ওই আসরে বাংলাদেশ দল গঠন করা হয়েছিল একঝাঁক তরুন, সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটারকে নিয়ে। যে দলে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, আফতাব আহমেদ, নাফিস ইকবাল, সৈয়দ রাসেল, হাসিবুল হক এবং সাফাক আল জাবিরদের নিয়ে গড়া। সেবারই স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ, দারুন কিছু করে ফেলার। কিন্তু গ্রুপ পর্ব উৎরাতে না পারায়, বাংলাদেশকে খেলতে হলো প্লেট পর্বে। এই পর্বের সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছিল নাফিস ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটি। প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল নেপালকে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ফাইনালে উঠতে পারলো না আশরাফুলরা। টস জিতে ব্যাট করতে নামা নেপালকে ১৮০ রানে বেধে ফেলেছিল সৈয়দ রাসেলরা।কিন্তু জবাব দিতে নেমে যেন ব্যাট করাই ভূলে গেলো বাংলাদেশ দল। আশরাফুল তখন বিশ্বে চমক সৃষ্টি করা এক ব্যাটসম্যান। অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ওই আসেরর আগেই তিনি গড়ে ফেলেছিলেন টেস্টে সর্বকনিষ্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড। যা এখনও অক্ষুন্ন। মুত্তিয়া মুরালিধরন-চামিন্দা ভাসদের মোকাবেলা করে সেঞ্চুরি করা আশরাফুল তো তখন সবার নজরেই। বাংলাদেশ দলও টেস্ট ঘরানায় পার রাখার পর দু`বছর পার করে ফেলেছে। অথচ তারাই কি না নেপালের ১৮০ রানের জবাবে অলআউট হয়ে গেলো ১৫৭ রানে। হেরে গেলো ২৩ রানের ব্যবধানে। লজ্জাজনক ওই হারের পর অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের চেরাহার আমূল বদলে গেছে। অনেক পরিবর্তণ এসেছে এই দেশের ক্রিকেটে। গত একযুগে অনেক বদলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। বড়দের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ছোটরাও নিয়মিত সাফল্য পাচ্ছে। সুতরাং, এক যুগেরও বেশি সময় আগের সেই ইতিহাস এবার পূনরাবৃত্তি না হোক, এটাই চায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ। আইএইচএস/জেএইচ