দেশজুড়ে

জঙ্গলে ফেলে যাওয়া বৃদ্ধাকে দেখতে গেলেন ডিসি, সঙ্গে নিলেন ফলমূল

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমি বিক্রির টাকা মেয়েদের দেওয়ায় জঙ্গলের পাশে ফেলে যাওয়া অসুস্থ বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার বালিগ্রাম মহল্লায় বিভিন্ন ফলমূল, চাল, পোশাক ও ওষুধসহ নগদ অর্থ নিয়ে ওই বৃদ্ধাকে দেখতে যান জেলা প্রশাসক। তিনি বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন ও তাকে চিকিৎসা দেওয়াসহ সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি তাকে ফেলে যাওয়া ছেলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান জেলা প্রশাসক।

এর আগে শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই বৃদ্ধাকে কে বা কারা জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যান। এ খবর শুনে এলাকাবাসী এবং কৃষক লীগ নেতা আব্দুল হাকিম বৃদ্ধার কাছে গিয়ে খোঁজখবর নেন। তিনি জানান, তার ছেলে তাকে জঙ্গলের পাশে ফেলে রেখে চলে গেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে তার ছোট মেয়ের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

ওই বৃদ্ধার নাম মর্জিনা বেগম (৮২)। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের চৈতন্যপুর-নাককাটিতলা গ্রামে। তার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।

জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, ‘ওই বৃদ্ধা ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। তাই তিনি তার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন কি না, তা আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না। তবে ছেলে যেহেতু আইন ভঙ্গ করেছেন, তাই তিনি অব্যশই আইনের আওতায় আসবেন।’

তিনি বলেন, ‘পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন-২০১৩ এর লঙ্ঘন হয়েছে এখানে। যেহেতু ওই বৃদ্ধা তার মেয়ের কাছেই নিরাপদ তাই মেয়ের পরিবারকেও সহায়তা করা হবে।’

এ সময় জেলা প্রশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফফাত জাহান, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাইমা হক, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও জেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিমসহ স্থানীয়রা।

আত্মীয়-স্বজন সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধা মর্জিনার চার কাঠা জমি ছিল। তার মধ্যে দুই কাঠা জমি বিক্রি করে তিন মেয়ের জন্য ব্যয় করেন। আর দুই ছেলেকে এক কাঠা করে লিখে দেন। এ নিয়ে ছেলে ও তাদের স্ত্রীরা তাকে ঠিকমতো দেখভাল করতেন না।

এ ঘটনার আগ পর্যন্ত ছোট ছেলে মনিরুল ইসলামের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গায় থাকতেন বৃদ্ধা মর্জিনা। শুক্রবার সকালে তিনি পৌর এলাকার বালিগ্রামে ছোট বোনের বাড়ির সামনের জঙ্গলে মাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যান।

সোহান মাহমুদ/এসআর/জিকেএস