নরসিংদীর পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় নৌপথে ডাকাতির ঘটনায় চার ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে নৌ-পুলিশ। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ডাকাতরা হলেন শফিকুল ইসলাম (২০), রাহাত হোসেন (২১), ইসমাইল হোসেন (২২) ও রিজভি মিয়া (২০)।
নৌ-পুলিশ জানায়, পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডাকাতি করেন ডাকাতরা। এর অংশ হিসেবে মেঘনা পারাপারের সময় মাঝ নদীতে স্পিডবোট নষ্ট হয়ে যাওয়ার বাহানা করেন চালক শফিকুল ইসলাম। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে এ সময় অন্য স্পিডবোটে ডাকাত দলের আরও তিন সদস্য আসেন। এরপর তারা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যান।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর হাতিরঝিল পুলিশ প্লাজায় নৌ-পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) পংকজ কুমার রায়।
ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মালামাল
তিনি বলেন, দীর্ঘ নয় বছর পরে প্রবাসফেরত নাসির উদ্দিনকে বাড়ি নিয়ে যেতে বড় ভাই অমিত আলী স্পিডবোট ঠিক করে। নরসিংদীর পূর্ব লঞ্চঘাট এলাকা দিয়ে মেঘনা নদী পারাপারের সময় মাঝ নদীতে স্পিডবোট নষ্ট হওয়ার কথা বলেন চালক শফিকুল। এ সময় শফিকুল তার মোবাইলফোন থেকে বেশ কয়েকবার কারও সঙ্গে কথা বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই অন্য একটি স্পিডবোটের মাধ্যমে তিনজন ওই বোটে উঠে তাদের আঘাত করেন। এরপর ডাকাতরা তাদের মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে সঙ্গে থাকা মালামাল নিয়ে চলে যান।
নৌ-পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় করিমপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে জলদস্যুদের ধরতে অভিযানে নামে। নৌ-পুলিশের সদস্যরা আসমাত আলীর স্পিডবোটচালক শফিকুলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দস্যুতার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন এবং সহযোগীদের নাম প্রকাশ করেন। তার দেওয়া তথ্যমতে ঢাকা নৌ-পুলিশের একটি দল তথ্য-প্রযুক্তির সহযোগিতায় বাকিদের গ্রেফতার করে।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) পংকজ কুমার রায়
এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি স্বর্ণের চেইন, এক জোড়া কানের দুল, একটি আংটি, রুপার ব্রেসলেট একটি, ভিভো মোবাইলফোন একটি, স্যামসাং মোবাইলফোন একটি, হুয়াইয়ে মোবাইলফোন একটি, গ্যালাক্সি ট্যাব একটি, হাতঘড়ি দুটি, স্পিডবোট দুটি ও নগদ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নরসিংদী মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনা প্রসঙ্গে নৌ-পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি শফিকুল ইসলাম বলেন, নৌপথ অপরাধমুক্ত রাখতে নৌ যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানে নৌ-পুলিশ কাজ করছে। নৌ-পুলিশ তার কাজের মাধ্যমে প্রবাসী নাসির উদ্দিনের মতো নৌপথ ব্যবহারকারী সবার কাছেই নির্ভরতার জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। নৌপথ অপরাধমুক্ত রাখতে নৌ-পুলিশের এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
টিটি/কেএসআর/জেআইএম