নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় ঘুমের ওষুধ সেবন করে জ্যোতি আগারওয়াল নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় করা মামলায় তার স্বামী সুমিত কুমার আগারওয়াল নিক্কিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে রোববার রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ চত্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। একই রাতে সৈয়দপুর থানায় স্বামী সুমিত কুমার আগারওয়াল নিক্কি, শাশুড়ি উমা দেবী আগারওয়াল, দেবর অমিত কুমার আগারওয়াল ও জা ডা. অমৃতা কুমারী আগারওয়ালের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেন জ্যোতির বড়ভাই বিমল কুমার। সুমিত কুমার সৈয়দপুর শহরের সুপরিচিত ব্যবসায়ী এবং উপজেলা হিন্দু কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২১ বছর আগে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পুরাতন বাজার এলাকার মৃত পুরনমল জাজোদিয়া আগারওয়ালের মেয়ে জ্যোতির সঙ্গে সৈয়দপুরের নতুন বাবুপাড়ার ডা. বদরুজ্জামান রোডের বাসিন্দা সুশিল কুমার আগারওয়ালের ছেলে সুমিত কুমারের বিয়ে হয়।
এক সপ্তাহ আগে দুই পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট লিখে তার ছবি তুলে সৈয়দপুর হিন্দু কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গের কাছে মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন জ্যোতি। কিন্তু কেউই তার ওপর পারিবারিক অত্যাচারের বিষয়ে সুরাহা করতে এগিয়ে না আসায় ১৫ সেপ্টেম্বর দিনগত রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তাকে হাসপাতালে না নিয়ে পারিবারিকভাবে চিকিৎসা করাতে থাকেন নিক্কির ছোট ভাই অমিত কুমার আগারওয়ালের স্ত্রী ডা. অমৃতা কুমারী আগারওয়াল। এতে তার অবস্থার আরও অবনতি হয়। পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় জ্যোতিকে। তিন দিন পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থেকে রোববার মারা যান তিনি।
গ্রেফতারের আগে সাংবাদিকদের জ্যোতির স্বামী সুমিত কুমার বলেন, ‘সুইসাইড নোট বলে যে উড়ো চিঠির কথা প্রচার করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। কারণ, এটি আমার স্ত্রীর লেখা নয়। তার হাতের লেখার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই। কীভাবে প্রমাণ করবেন যে চিঠিটা জ্যোতি লিখেছে?’
সৈয়দপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গ্রেফতার সুমিত কুমারকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উদ্ধার সুইসাইড নোটটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এসজে/জেআইএম