‘বাংলাদেশের পুস্তক প্রকাশনা খুবই সম্ভাবনাময় একটি খাত। আমাদের জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হলে এই খাতের দিকে দৃষ্টি দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এখন যেভাবে চলছে তাতে এই খাতে বড় বণিক-পুঁজি বিনিয়োগের আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই। মানুষের শুভবুদ্ধিপ্রসূত সহযোগিতার ওপর ভর করেই চলতে হবে।’ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। মাসব্যাপি অমর একুশে বইমেলার নবম দিনে ‘বাংলাদেশের প্রকাশনা কার্যক্রম : অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহমাদ মাযহার। আলোচনায় অংশ নেন শিল্পী রফিকুন নবী, কবি তারিক সুজাত, লেখক রেজানুর রহমান এবং পশ্চিমবঙ্গের লেখক-গবেষক ইমানুল হক। সভাপতিত্ব করেন শিল্পী হাশেম খান। আহমাদ মাযহার তার প্রবন্ধে বলেন, ‘বিদ্যমান ব্যবস্থায় বাংলা একাডেমির বইমেলা একে যেমন প্রণোদনা দিয়ে চলছে তেমনি ছোট ছোট প্রণোদনার ওপর ভর করেই একে আরো কিছুকাল চলতে হবে। কিন্তু খাতের যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে তাকে উন্মোচিত করতে হলে প্রয়োজন রাষ্ট্রীয়, বেসরকারি ও ব্যক্তিপর্যায়ের মিলিত উদ্যোগ।’ আলোচকবৃন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রকাশনা জগত এখন অনেক বৈচিত্র্যময়। জনপ্রিয় বইয়ের বাইরে অভিধান, অনুবাদ ইত্যাদি গভীরতাবাহী প্রকাশনায়ও বাংলাদেশ এখন অনেক এগিয়ে গেছে। নিঃসন্দেহে বাংলা একাডেমির বইমেলা বাংলাদেশের প্রকাশনার সামগ্রিক অগ্রগতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। তবে একই সঙ্গে আমাদের প্রকাশনার মানের দিকেও মনোযোগী হতে হবে। বইয়ের অর্ন্তবস্তু, পান্ডুলিপি সম্পাদনা, শৈল্পিক বিন্যাস এবং কপিরাইট নিশ্চয়তা বিধানের ক্ষেত্রেও আমাদের দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।’ তারা বলেন, ‘মানসম্পন্ন প্রকাশনা নিশ্চিতের পাশাপাশি এর বাজার ও বিপণন পরিসর তৈরিকেও প্রকাশনা ক্ষেত্রে আমাদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।’ সভাপতির বক্তব্যে শিল্পী হাশেম খান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রকাশনা জগত ঐতিহ্যবাহী এক শিল্পক্ষেত্র। জ্ঞান অন্বেষু মানুষের প্রয়োজন এবং নান্দনিক উৎকর্ষতা উভয়ের মিলিত সারাৎসারে ঐতিহ্যের পথ বেয়ে এখন তা আধুনিক রুচির সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তবে এই প্রকাশনা জগতকে আরো সমৃদ্ধ করতে আমাদের আরো বহু পথ পাড়ি দিতে হবে।’ সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল সত্যেন সেন শিল্পগোষ্ঠীর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী নাদিরা বেগম, দিলরুবা খান, আজগর আলীম, মো. নূরুল ইসলাম, আবদুল কুদ্দুস এবং মনিরা ইসলাম। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রাজু চৌধুরী (তবলা), মো. ফায়জুর রহমান (বাঁশি), মো. ফারুক (প্যাড), আনোয়ার সাহদাত রবিন (কী-বোর্ড) এবং আশুতোষ শীল (দোতারা)। এমএম/এমএইচ/এসকেডি/এবিএস