বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী শেরপুরের গারো পাহাড়ে বাঘের দেখা মিলেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এলাকাবাসী জানান, এক মাস ধরে গারো পাহাড়ের পার্শ্ববর্তী বাকাকুড়া এলাকার কালভার্টের ভেতরে বাঘটি বাস করছে। গত ১৫ দিনে বাঘটির আক্রমণের শিকার হয়েছে ১৯ গবাদিপশু। তাই বাঘ আতঙ্কে বন এলাকায় গবাদিপশু চরাতে ভয় পাচ্ছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি বাকাকুড়া গ্রামের কৃষক মনজর আলীর গরু বাঘের আক্রমণে আহত হয়। শুধু মনজর আলীই নন, বাকাকুড়া এলাকার প্রায় ১৫ কৃষকের ১৯ গরু-ছাগল বাঘের আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে দাবী স্থানীয়দের।
তারা বলেন, বাকাকুড়া গজনী সীমান্তে ছোট একটি কালভার্টের ভেতরে বাঘটি বাস করে। দিনের বেলায় খাবারের খোঁজে লোকালয়ে এবং বনের সবুজ মাঠে চরাতে দেওয়া গবাদি পশুকে আক্রমণ করছে। ইতোমধ্যে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১৫ ছাগলের।
এদিকে, বন বিভাগের দায়িত্বরত প্রহরীরাও বাঘ সদৃশ্য প্রাণীর বিচরণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক প্রহরী বলেন, ডিউটির সময় কয়েকবার প্রাণীটি দেখেছি। প্রাণিটি কুকুর বা শেয়ালের চেয়ে আকারে বড়। মেছো বাঘের চেয়েও আকারে কিছুটা বড়। তবে বাঘ কিনা তা নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
স্থানীয় আলম মিয়া, ঠান্ডু মিয়া, হামিদুর, সবুজ মিয়া ও সাইবরের ছাগলের মৃত্যু হয়েছে বাঘের আক্রমণে। তাদের দাবি, বিকেলের কোনো এক সময় মাঠে তাদের ছাগলের উপর আক্রমণ করে বাঘটি। পরে তাদের ছাগলের মৃত দেহাবশেষ পাওয়া যায়।
স্থানীয় নুর জালাল বলেন, রাতের বেলায় প্রাণীটি দেখেছি। মেছো বাঘের চেয়ে বড়, তবে অন্ধকার হওয়ায় গায়ে ডোরাকাঁটা আছে কিনা তা বুঝতে পারিনি।
আলম মিয়া বলেন, মেছো বাঘ হলে এভাবে গরু ছাগলের উপর আক্রমণ করতো না। এলাকার অনেকেই দেখছে।
শেরপুরের বন্যপ্রাণী ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার বলেন, এলাকাবাসী বাঘের বিষয়টি বন বিভাগের স্থানীয় বিট অফিস ও রেঞ্জ অফিসে জানিয়েছে। তবে প্রাণীটি আদৌ বাঘ কিনা বা বাঘ হলেও কোন প্রজাতির সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক আবু ইউসুফ বলেন, সীমান্তে যেহেতু ঘন বন রয়েছে, তাই এটি যেকোনো বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল। তবে প্রাণীটি বাঘ কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ নিয়ে কর্মকর্তারা কাজ করছেন। চিহ্নিত করা সম্ভব হলে বাঘটির সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইমরান হাসান রাব্বী/এএইচ/এএসএম