নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা মেঘনা ও ধলেশ্বরী এই তিন নদীর মোহনার চর কিশোরগঞ্জ ও চর হোগলা এলাকায় নৌ-চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে ও নৌ-শ্রমিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে শীতলক্ষ্যার তীরে নৌযান নোঙর করে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে নৌযান শ্রমিকরা। বুধবার দুপুরে শহরের ৫নং ঘাট এলাকায় সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের অর্ন্তভুক্ত) নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নৌ ফাঁড়ি পুলিশের কার্যালয়ের সামনে পুনরায় ৫নং ঘাটে এসে শেষ হয়। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুবজ শিকদারের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাহাজ শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক অহিদুর রহমান মাস্টার প্রথম শ্রেণি, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নিজামউদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক নূরে আলম হাওলাদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ শাখার সহ সভাপতি মাসুদ রানা, নাননু মিয়া, নজরুল ইসলাম, আলাউদ্দিন, কাওসার প্রমুখ।সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, তিন নদীর মোহনাসহ ১২টি পয়েন্টে চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ নৌ-ডাকাতি ও সন্ত্রাস বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াসহ ৭ দফা দাবিতে সম্প্রতি নৌ পুলিশের ডিআইজি বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন। এছাড়া একাধিকবার আন্দোলন আলটিমেটাম দেয়া হলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতেই চলছে চাঁদাবাজি। শ্রমিকরা জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তিন নদীর মোহনায় এমভি কাওসার অ্যান্ড নিলয় নামের একটি বাল্কহেডে হামলায় ৫ জন শ্রমিক আহত হয়। ৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশের উপস্থিতিতেই চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। ১ ফেব্রুয়ারি নৌ-চাঁদাবাজরা অভিপ্রায় নামের একটি নৌযানে হামলা চালিয়ে মাস্টার মো. মুছা মিয়াসহ অন্য শ্রমিকদের মারধর করে সর্বস্ব লুটে নেয়। গত বছরের ২৮ নভেম্বর দুপুরে চাঁদা না দেয়ায় নৌ-চাঁদাবাজদের নিক্ষিপ্ত গুলিতে আন্নি আনিকা নামের একটি বালুবাহী বাল্কহেডের গ্রিজার মাসুম গুলিবিদ্ধ হয়। তিন নদীর মোহনায় আওয়ামী লীগ নামধারী নেতা নাসিরউদ্দিন মেম্বার, চাঁন মিয়া, আফসু চেয়ারম্যান, নান্নু মিয়া ও হারুন শেখসহ একাধিক গ্রুপের ক্যাডার বাহিনী শ্রমিকদের উপর হায়েনা রূপে হামলা চালিয়ে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। এছাড়া তারা নিজেরাও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। গত ২২ ডিসেম্বর তিন নদীর মোহনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে জামাল নিহত ও ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২০ জন আহত হয়। এছাড়া অসংখ্য খুনের ঘটনা ঘটলেও সেগুলোর কোনটিরই বিচার হয়নি।নদীপথের হায়েনা খ্যাত নাসির উদ্দিন ওরফে নাসির মেম্বারের ফাঁসির দাবিতে পোস্টার সাঁটিয়েছে চর হোগলা এলাকাবাসী। ওই পোস্টারে নাসিরসহ ৭ জনকে খুনী আখ্যায়িত করে ফাঁসির দাবি করা হয়েছে। শাহাদাত হোসেন/এমএএস/আরআইপি