গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার শোলাগাড়ি এলাকায় ইটভাটায় কাজ করার সময় বজ্রপাতে পাঁচজন মৃত্যুর ঘটনায় স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এলাকা।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে বকুল মিয়ার মালিকানাধীন বিইবি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদুলপুর ইউনিয়নের চকনদী গ্রামের সিরাজুল শেখের ছেলে সিয়াম শেখ (১৮), আয়তাল উদ্দিনের ছেলে রাশেদুল ইসলাম (২২), আল-আমিন মিয়ার ছেলে শাহাদৎ মিয়া (১৪), একই ইউনিয়নের তিলকপাড়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে নাজমুল ইসলাম (২০) ও কাবিলপুর সোনাতলা গ্রামের আ. জলিল মিয়া (৬০)। এদের মধ্যে জলিল ভাটা এলাকায় ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে ইটভাটায় ইট পরিবহনের কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। বিকেলে বৃষ্টি শুরু হলে ভাটার পাশের টিনের একটি ছাপরার নিচে তারা আশ্রয় নেন। এ সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে চারজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজন মারা যান।
নিহত শাহাদতের বাবা আল-অমিন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভাটাত (ভাটাতে) ইটের গাড়িত কাম করবের যায়য়া চড়প (বাজ) পড়ি মরি গেছে। হামার বাবাটাক আর কই পামো?’ বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
নিহত রাশেদুলের বাবা আয়তাল উদ্দিন বলেন, ‘বকুলের ভাটাত চড়প পড়ার কথা শুনিয়ে দৌড়ি যায়য়া দেখি হামার গ্রামের দুই ভাইস্তা আর মোর বাবা রাশেদুল একঠাই পড়ি আছে। কাছে যায়য়া দেখোম (দেখি) বাবার গোটাল (গোটা) শরীল পোড়া গেছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ইউনুছ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভাটার ভেতরে গাড়িতে ইট তুলছিলেন সিয়াম, রাশেদুল ও শাহাদৎ। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতের শব্দ শোনা যায়। পরে দেখি তারা সবাই মাটিতে শুয়ে আছে। দৌড়ে কাছে গিয়ে দেখি শাহদতের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। রাশেদুলের শরীর পুড়ে গেছে। একটু সামনে গিয়ে দেখি ঘাস কাটতে আসা জলিল চাচাও মাটিতে পড়ে আছেন। তিনি একটু নড়াচড়া করছিলেন দেখে অটোতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনিও মারা যান।’
সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাদূল্লাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। মৃত ব্যক্তিদের তালিকা করা হচ্ছে। এই তালিকা জেলা প্রশাসনকে পাঠানো হবে। প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে।
এসআর/এএসএম