রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) মিনি জু-তে (ছোট চিড়িয়াখানায়) একটি হরিণ মারা গেছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাতে এটি মারা যায় বলে নিশ্চিত করেছেন দায়িত্বরত কর্মকর্তা।
Advertisement
কয়েকদিন আগে অন্য একটি হরিণের শিংয়ে আঘাত পায় হরিণটি। ধারণা করা হচ্ছে, আঘাতের কারণে সেপ্টিসিমিয়ায় (ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে রক্ত দূষণজনিত রোগ) আক্রান্ত হয়ে প্রাণীটির মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারিতে অধ্যয়নরত একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ঠিকমতো দেখাশোনা ও যত্ন নিলেই এ ক্ষত সারানো সম্ভব ছিল। যত্ন ও চিকিৎসার অভাবেই হরিণটি মারা গেছে। এর আগেও এভাবে একটি হরিণের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জাগো নিউজকে বলেন, চিড়িয়াখানার পশুদের দেখাশোনা করার জন্যে একটি কমিটি রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ জনের বেশি ভেটেরিনারিতে অভিজ্ঞ শিক্ষক রয়েছেন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করা অভিজ্ঞ ছাত্রও রয়েছেন অসংখ্য। একটু যত্ন ও চিকিৎসা দিলেই হরিণটিকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিড়িয়াখানায় দেখা যায়, ছোট এ চিড়িয়াখানায় এখনো পাঁচটি হরিণ, দুটি উটপাখি, একটি ময়ুর ও কয়েকটি খরগোশ রয়েছে। এরমধ্যে একটি উটপাখি মারাত্মকভাবে আহত ও অসুস্থ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হরিণের শিংয়ের আঘাতেই গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে উটপাখির। অযত্নে উটপাখিটির অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
সরেজমিন আরও দেখা যায়, চিড়িয়াখানার সামনে মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে হরিণের ফুসফুস এবং যকৃত নমুনা হিসেবে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আমিনা বেগম ও একদল ছাত্রছাত্রী।
তাদের নমুনা নেওয়া শেষ হলে একই অনুষদের অ্যানাটমি, হিস্টোলজি অ্যান্ড ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (রাসেল) ও আরেকদল ছাত্রছাত্রী হাড় সংরক্ষণের জন্য আসেন।
Advertisement
অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতবারের মারা যাওয়া হরিণের হাড়ও সংরক্ষণ করেছিলাম আমি। এগুলো পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ও গবেষণায় কাজে ব্যবহার করা হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, হরিণটি চিকিৎসার অভাবে মারা গেলো। চিকিৎসার সময় প্রয়োজনে কাউকে পাওয়া যায়নি। মারা যাওয়ার পর সবাই গবেষণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আমিনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ডায়াগনসিস এখনো শেষ হয়নি। ফুসফুসে কিছু ইনফেকশন পাওয়া গেছে। ডায়াগনসিস শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
অ্যানিম্যাল প্রোডাকশন অ্যান্ড মিনি জু কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো মোফাজ্জল হোসেইন জাগো নিউজকে বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। না দেখে কিছুই বলতে পারছি না।
এসআর/জিকেএস