চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মেয়র পদে প্রার্থীর দৌঁড়ে রয়েছেন ১৫ জন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এলাকায় নানাভাবে গণসংযোগ, কুশল বিনিময়ও করছেন। বর্তমানে বেশির ভাগ প্রার্থী মেয়র পদে দলীয় টিকেট পেতে তৃণমূল থেকে দলের হাইকমান্ডের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। বলতে গেলে এসব প্রার্থীরা মনোনয়নের জন্য এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। অনেকে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অনুকম্পা পেতে কয়েকদিন ধরে রাজধানী ঢাকা অবস্থান করছেন । দেশে প্রথম দফা পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত চকরিয়া পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী ছিলেন মাত্র ছয়জন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দুইবারের সাবেক কাউন্সিলর ফজলুল করিম সাঈদী, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্যানেল মেয়র জাহেদুল ইসলাম লিটু, জেলা আওয়ামী লীগের আগের কমিটির ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. নুরুল আবছার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওয়ালিদ মিল্টন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছৈয়দ আলম কমিশনার। কিন্তু দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্তে এখানে বাড়তে থাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা। এরপর মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় যুক্ত হন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও চকরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ একেএম গিয়াস উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুল কবির, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শিল্পপতি শফিউল আলম বাহার। তাদের বাইরে নীরবে দলীয় মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুর রশিদ দুলাল, উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম উল্লাহ, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ সাহাব উদ্দিন মাহমুদ ও আওয়ামী লীগ নেতা সাংবাদিক এসএম সিরাজুল হক। আওয়ামী লীগের তৃনমুলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রার্থী সংখ্যা বাড়লেও সব প্রার্থী কিন্তু সমানভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি ভোটের মাঠে। সাংগঠনিক দক্ষতা ও ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন প্রার্থী ভোটের মাঠে জনপ্রিয়তায় রয়েছেন। এসব প্রার্থীদের মধ্যে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওয়ালিদ মিল্টন ও আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল করিম সাঈদী। এরা তিনজনই পৌরসভার এক একটি অঞ্চলের বেশির ভাগ ভোট ব্যাংক তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। মূলত আঞ্চলিকতার ইস্যুতে তারা জনপ্রিয় ও শক্তিশালী প্রার্থী। এছাড়া তৃণমূলে সাধারণ ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝেও সমান জনপ্রিয়তা তাদের। বাকিরাও যে যার মতো ভাল অবস্থানে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাদের সমর্থকরা। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ভোট দেবেন ৩৯ হাজার ৯৯২জন ভোটার। তার মধ্যে রয়েছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ১৯৩ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৯১৫ জন নারী ভোটার, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৩৪১ জন পুরুষ ও ২ হাজার ৪৩ জন নারী ভোটার, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৩৯০ জন পুরুষ ও ২ হাজার ১১৮ জন নারী ভোটার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৫৪ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৮৫০ জন নারী ভোটার, ৫ নম্বর ওর্য়াডে ২ হাজার ৪৯৪ জন পুরুষ ও ২ হাজার ২১১ জন নারী ভোটার, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ২৬৮ জন পুরুষ ও ২ হাজার ২২০ জন নারী ভোটার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৫৫২ জন পুরুষ ও ২ হাজার ৩৫৮ জন নারী ভোটার, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ৫৯৪ জন পুরুষ ও ২ হাজার ৩০৪ জন নারী ভোটার ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ২ হাজার ১৮৪ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৮৯৯ জন নারী ভোটার রয়েছে।সায়ীদ আলমগীর/এসএস/আরআইপি