রোম নগরীর আয়তনের সমান একখণ্ড বরফের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ গেল প্রায় দেড় লাখ পেঙ্গুইনের। কুমেরুর কেপ ডেনিসনের কাছে বসবাস করছিল ওই পেঙ্গুইনগুলো। প্রাণী বিশেষজ্ঞদের কাছে ‘অ্যাডলি পেঙ্গুইন’ নামেও পরিচিত। মূলত কুমেরুর উপকূলেই দেখা মেলে এদের।নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির কয়েক জন গবেষক জানান, ২০১০ সালে ওই এলাকায় আচমকাই ভেসে এসে আটকে যায় একটি বিরাট বরফখণ্ড। বিজ্ঞানীরা হিমশৈলটির নাম রেখেছেন ‘বি ০৯ বি’। এর আয়তন প্রায় রোম শহরের সমান। আলাদা হয়ে যাওয়া এ খণ্ডটিতেই ছিল প্রায় দেড় লাখ অ্যাডিলে পেঙ্গুইনের আবাসস্থল। এক হাজার একশ বিশ বর্গমাইলের ওই বরফ খণ্ডটিতে থাকা সকল পেঙ্গুইনই সাগরে মারা যায়। এর আগে খোলা জলাশয়ের ধারে থাকত ওই অ্যাডলি পেঙ্গুইনের দল। তাই খাবারের সন্ধান পেতে তেমন কোনো কষ্ট হত না। তবে এই হিমশৈলটি বদলে দিয়েছে পেঙ্গুইনের জীবন-যাপন। খাবারের সন্ধানে এখন প্রায় ৭০ মাইল অর্থাৎ প্রায় ১১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ ঘুরতে হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঠিক এ কারণেই পেঙ্গুইনদের সংখ্যাটা কমে আসছে। কিন্তু গত আট নয় মাসে উল্লেখযোগ্য ভাবে ওদের সংখ্যাটা কমে গিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন। তবে এখানেই শেষ নয়। এমন চললে যে আগামী ২০ বছরেই ওই পেঙ্গুইনের দল নির্বংশ হবে, সে সতর্কবার্তাও দিয়ে রেখেছেন বিজ্ঞানীরা। অবশ্য হিমশৈলটি অন্য কোথাও সরে গেলে বা ভেঙে পরলে হয়তো প্রাণে বাচতে পারে পেঙ্গুইনগুলো।গত এক শতাব্দী ধরে কেপ ডেনিসনের পেঙ্গুইনদের উপর নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা। আর তা শুরু হয়েছিল ১৯১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার ভূতত্ত্ববিদ ডগলাস মসানের কুমেরু অভিযানের সময় থেকে। তখন নাকি ওই পেঙ্গুইনদের আওয়াজে কান পাতাই দায় ছিল। এক জায়গায় এমনটাই লিখেছিলেন ডগলাস।এখন এই পেঙ্গুইনের দল অস্বাভাবিক ভাবেই নিশ্চুপ বলে মন্তব্য করেছেন নিউ সাউথ ওয়েলস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ক্রিস টার্নি। সাদা-কালো প্রাণীটি এখন আর চনমনে পায়ে ঘুরে বেড়ায় না। ক্রিসের কথায়, কেমন যেন ভদ্র, শান্ত। প্রতিদিনই বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ওরা।এসআইএস/এবিএস