গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকার আইয়ুব আলী মোল্লার ছেলে সাহাবুদ্দিন মোল্লা (৩৬)। ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালাতেন। আড়াই বছর আগে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বেদগ্রাম এলাকায় একটি দ্রুতগতির ট্রাক তাকে চাপা দেয়।
এতে তার দুই পা ভেঙে পঙ্গু হয়ে যান। পরে ইজিবাইক চালাতে না পারায় সংসারে নেমে আসে অভাব-অনটন। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের মুখে আহার তুলে দিতে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন।
কিন্তু তারপরও তার সংসার এগোচ্ছিল না। অভাব আর পঙ্গুত্বের কারণে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। এখন বৃদ্ধ মা ও সাত বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে তার পরিবার।
সাহাবুদ্দিন মোল্লার অসহায়ত্বের কথা জানতে পেরে এগিয়ে এসেছেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা। বুধবার (৯ নভেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলায় জেলা-ই-সেবা কেন্দ্রের সামনে তার হাতে বিভিন্ন মালামাল তুলে দেওয়া হয়।
সাহাবুদ্দিন যাতে মুদি ব্যবসা করে সংসার চালাতে পারেন সেজন্য তাকে চাল, ডাল, তেল, আটা, চিপস, শ্যাম্পু, সাবান, খাতা, কলম, পেনসিল, চকলেট, নুডলস, টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, মসলাসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল কিনে দেন জেলা প্রশাসক।
সহায়তার মালামাল হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত সাহাবুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘ডিসি স্যার যে উপকার করলেন তা আমি কোনোদিন ভুলবো না। তিনি আমার অভিভাবকের মতো কাজ করেছেন। যেটা আমার আত্মীয়-স্বজনের করার কথা ছিল সেটা স্যার করেছেন। আমি এই মালামাল দিয়ে ঘরের বারান্দায় দোকান শুরু করবো। বিক্রি করে যে লাভ হবে সেই অর্থ দিয়ে সংসার চালাবো। আর ভিক্ষাবৃত্তি করবো না।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ওই ব্যক্তি আমার সঙ্গে দেখা করে তার সমস্যা ও অসহায়ত্বের কথা জানান। যেহেতু তার পা ভাঙা, হাঁটতে-চলতে সমস্যা তাই তাকে মুদি ব্যবসা করতে কিছু মালামাল কিনে দিয়েছি। একজন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে ভালো লাগছে।
এসআর/জিকেএস