এবার শীতকালীন সবজির উচ্চ ফলন হয়েছে শেরপুরে। জেলার প্রতিটি বাজারেই আসতে শুরু করেছে শীতের সবজি। ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজারেও জমে উঠেছে কেনাবেচা। তবে আমদানি বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারেও।
আড়তদাররা বলছেন, চরাঞ্চলের সবজি বাজারে আসতে শুরু করায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে খুব শিগগির কম দামে সবজি মিলবে।
প্রতিদিন ভোরে ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে শেরপুর-জামালপুর সীমান্তবর্তী ব্রহ্মপুত্র পাড়ের বাজার। জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি সবজির বাজার এটি। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী জামালপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ থেকেও পাইকারি ক্রেতা আসেন এই বাজারে। চরাঞ্চলের এই সবজি বিক্রি হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ট্রাকে করে এই বাজারের সবজি যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
ময়মনসিংহ থেকে আসা পাইকারি ক্রেতা মজিদ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ময়মনসিংহের উত্তরে এটাই সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজার। আশপাশে চরাঞ্চল হওয়ায় খুব কম দামে এখানে সবজি পাওয়া যায়। এখান থেকে বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন খরচও তুলনামূলক কম। তাই আমরা এখান থেকেই পাইকারি সবজি কিনে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি।
আরমান আলী নামের আরেকজন বলেন, ‘নদের চর এলাকায় সবধরনের সবজির আবাদ ভালো হয়। আবাদ ভালো হওয়ায় দামও খুব সস্তা। তাই দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এই বাজার থেকে সবজি কিনে নিয়ে যান। খুচরা বাজারের দোকানদাররাও এখান থেকে সবজি কিনে তাদের ব্যবসা চালান।’
এদিকে উচ্চ ফলন হওয়ায় খুব শিগগির খুচরা বাজারে সবজির দাম কমবে বলে মনে করছেন আড়তদাররা।
আড়তদার শাকিল মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবারে শীতকালীন সবজির আবাদ ভালো হয়েছে। পাইকারি বাজারে সবজি আসা শুরু হয়েছে। খুচরা বাজারে দু-চারদিনের মধ্যেই কম দামে সবজি পাওয়া যাবে।’
তবে বাজারে আমদানি বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। কৃষক রাসেল মিয়া বলেন, ‘দেশে সব কিছুরই দাম বেশি, শুধু কাঁচাবাজারের দাম কম। অথচ আবাদের সব কিছুরই খরচ বেশি। সবমিলিয়ে আবাদ বেশি হইলেও লস, খারাপ হইলেও লস! কৃষকের লাভ খুব বেশি একটা হয় না।’
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছর শেরপুরে ৮ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬৫ হেক্টর বেশি।
এ বিষয়ে শেরপুরের খামারবাড়ির উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস জাগো নিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে সবজি চাষে লক্ষ্যমাত্রা গতবারের রেকর্ড ছাড়াবে। শীতের সবজির আবাদের জন্য মাঠ পর্যায়ে সবধরনের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ অব্যাহত আছে।
ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জেআইএম