একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীকে দেয়া ট্রাইব্যুনালের রায় ফাঁসের মামলায় তার স্ত্রী-পুত্রসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক কেএম শামসুল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে আগামী ২৮ মার্চ থেকে সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণ শুরুর দিন ঠিক করে দিয়েছেন তিনি।তবে সোমবার আদালতে হাজির হয়ে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন সালাউদ্দিন কাদেরের স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী, ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীসহ ছয় আসামি। এই মামলার অন্য এক আসামি পলাতক।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর গতবছরের ২১ নভেম্বর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকর করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরের। তারপরে আজ তার স্ত্রী-পুত্রের বিচার শুরু হলো।সাকার স্ত্রী-পুত্র ছাড়া রায় ফাঁসের মামলার বাকি আসামিরা হলেন- আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, সাকা চৌধুরীর ম্যানেজার মাহবুবুল আহসান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মচারী নয়ন আলী ও ফারুক হোসেন। এছাড়া আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন সাকার আইনজীবী ফখরুলের সহকারী মেহেদী হাসান।২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। রায় ঘোষণার দিন সকালেই তার স্ত্রী, পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা রায় ফাঁসের অভিযোগ আনেন। ওই দিন তারা রায়ের ‘খসড়া কপি’ মিডিয়া কর্মীদের দেখান। তখন তারা আদালতের রায় নিয়ে কটাক্ষও করেন। রায় ঘোষণার পরদিন ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন নিবন্ধক (রেজিস্ট্রার) একেএম নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেন। পরে ৪ অক্টোবর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরের বছরের ২৮ আগাস্ট ডিবির পরিদর্শক মো. শাহজাহান এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন, যাতে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৫ জনকে সাক্ষী করা হয়।পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সালাউদ্দিন কাদেরের আইনজীবীর সহকারী মেহেদী বড় অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে ট্রাইবুনালের দুই কর্মীর মাধ্যমে রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ বের করেন। ওই অংশটিই রায়ের দিন আদালতে সাংবাদিকদের দেখানো হয়। আসামি নয়ন ও ফারুক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।এফএইচ/এনএফ/আরআইপি