সিলেটে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম জন্মশতবর্ষপূর্তি উৎসব। নগরের রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. তপোধীর ভট্টাচার্য। এরপর মুক্তমঞ্চে গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা।শাহ আবদুল করিমের জন্মশতবর্ষপূর্তি উদযাপন পর্ষদের উদ্যোগে এবং প্রথম আলোর সহযোগিতায় এ উৎসবের আলোচনাপর্বে সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. তপোধীর বলেন, অসাম্প্রদায়িকতাই ছিল বাউল শাহ আব্দুল করিমের জীবনদর্শন। তিনি মনেপ্রাণে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করেন। তার গানসহ প্রতিটি কর্মে ওই বিষয়টি ফুটে উঠেছে।আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মো. সালেহ উদ্দিন, বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, ভারতের লেখিকা ডক্টর স্বপ্না ভট্টাচার্য, কবি ও ছড়াকার তুষার কর, করিম-তনয় শাহ নূর জালাল।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেন, বাউল আবদুল করিম একজন বড় প্রতিভাবান মানুষ ছিলেন। বড় বিস্ময়ও তিনি। এক’শ বছর আগে জন্ম নেয়া একজন মানুষ কতো চিরকালীন-আধুনিক ও সমকালীন হতে পারেন এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাউল করিম। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও আধুনিক এই সময়েও করিমের গান সব সময় আমাদের নতুন প্রজন্ম মনভরে শোনে। কারণ তার গানের মধ্যে মানুষের কথা ও সহজিয়া ভাষায় প্রাচীনের কথা ফুটে উঠেছে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আমি বাউল করিমকে শ্রদ্ধা করি ভালোবাসি কারণ তার কাছ থেকে আমি অসাম্প্রদায়িকতা শিখেছি। আমি তাকে শ্রদ্ধা করি একারণে যে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ না করেও তিনি সাম্রাজ্যবাদ, সামান্তবাদ ও শ্রেণি-বৈষ্যমকে বুঝতে পেড়েছেন এবং তার গানের মাধ্যমে সেটিকে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। করিম আমাদের তস্কর শ্রেণিকে চিনিয়েছেন।রাত সাড়ে ৭টায় সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতে কলকাতার প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিক বাউল করিমের গান নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন। এছাড়া ভারত ও বাংলাদেশের স্বনামধন্য শিল্পী ও করিমশিষ্যরা গান পরিবেশন করেন।ছামির মাহমুদ/বিএ