‘বছর ঘুরে এই সময়টির জন্যই তো অপেক্ষা করি। লেখকরাও তাই। লেখক-প্রকাশকরা দিনক্ষণ ধরে ধরে প্রহর গুনতে থাকেন। সকলের প্রচেষ্টায় মেলাটি আজ বটবৃক্ষ। ঝড় বটবৃক্ষের ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু একেবারে শেষ করে দিতে পারে না। আমাদের এই প্রাণের মেলার ওপরেও অনেক আঘাত এসেছে, প্রতিবন্ধকতা এসেছে। লেখকদের হত্যা করা হয়েছে, প্রকাশকদের হত্যা করা হয়েছে। এখনও হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমন আঘাত সয়ে সয়েই একুশে মেলা আজ বটবৃক্ষের রূপ নিয়েছে।’বলছিলেন, সময় প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ। ফরিদ আহমেদ বুধবার সন্ধ্যায় সময় প্রকাশনীর স্টলে একান্ত আলাপে মিলিত হন জাগো নিউজের সঙ্গে। মেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা হয় তার সঙ্গে।বলছিলেন, ‘মেলা তো জমে উঠেছে। যারা ভালো লেখকদের বই আগেই প্রকাশ করছেন, তাদের ব্যবসা ভালোই বলে মনে হচ্ছে। আবার অনেকেই শেষের দিকে ভালো বই এনে থাকেন। তাদের ব্যবসা শেষ বেলায় জমে ওঠে।’মেলার মধ্য সময়ে সময় প্রকাশনীর ব্যবসা কেমন হলো, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভালো। তবে আরেকটু অপেক্ষা। শুক্রবারে কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবালের একটি বই আসছে। আসা করছি, ভালো কাটতি হবে। বলতে পারেন, শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। আমরা শেষ ভালো দিয়ে মেলার ইতি টানবো।’মানহীন লেখার অভিযোগ সর্বত্রই, এমন অভিযোগ প্রকাশকদের বিরুদ্ধেও-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মেলায় প্রচুর বই আসছে। এ কারণেই মানহীন বইয়ের প্রসঙ্গটি সামনে আসছে। আমরা এটি ইতিবাচকভাবেই দেখতে চাই। যেকোনো বই মানুষ পড়েই তো মূল্যায়ন করে। পাঠক বই পড়ছে, তা এই অভিযোগ থেকেই প্রমাণিত। পাঠক ভালো বই পড়লেই তো লেখক ভালো বই লিখবে।’‘যেমন সায়েন্স ফিকশনের বইয়ে সেই অর্থে সাহিত্য থাকে না। কিন্তু ব্যাপক পাঠক আগ্রহ থাকে। পাঠক এমন বই পড়তে পড়তেই সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যান। তখন লেখককেও পাঠকের দিক গুরুত্ব দিয়ে বই লিখতে হয়।’মেলার পরিবেশ আগের বছরগুলো থেকে থেকে বেশ ভালো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই মেলাটি আপন করে নিচ্ছে বলেই আজ এমন একটি পরিবেশ দাঁড়িয়েছে। মেলার পরিধি বাড়ছে। স্টলগুলো সুন্দরভাবে বিন্যাস করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নিতে পারছেন।’মেলার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে এই প্রকাশক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবারে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তারা সর্বাত্মক সহায়তা করছেন আমাদের। আশা করছি, কোনো অঘটন ঘটবে না। তবে মানুষের বিবেক জাগ্রত না হলে দৃশ্যমান নিরাপত্তা বাড়িয়ে সবাইকে নিরাপত্তা দেয়া যায় না।’এএসএস/বিএ