দেশজুড়ে

চড়ুই পাখিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে বাগেরহাটের মোংলায় গাছে গাছে চড়ুই পাখির জন্য বাসা তৈরি করে দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন। পাঁচফোড়ন শিল্প পরিবারের একদল যুবক এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পাখিপ্রেমীরা।

চড়ুই সবার পরিচিত একটি ছোট পাখি। আগে বাড়িঘরে হরহামেশাই দেখা যেতো। ঘর ছাড়াও বাড়ির গাছপালায় দেখা মিলতো এ চড়ুই পাখির। কিন্তু এখনকার ইট-পাথরের বাড়িঘরে আর দেখা মেলে না এ পাখির। শহরের মানুষও এখন ভুলতে বসেছে চড়ুই পাখিকে।

তবে মোংলা পৌর শহরের শেখ আ. হাই সড়কের ডিভাইডারের গাছপালা এখন চড়ুই পাখির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। এ বছর গাছগুলোতে বিপুলসংখ্যক পাখির আনাগোনা ও কিচিরমিচির শব্দে সকাল ও সন্ধ্যা মুখরিত হচ্ছে। দুই বছর ধরে ডিভাইডারের গাছগুলো চড়ুইয়ের অভয়াশ্রমে পরিণত হলেও চলতি বছরের শীতের শুরু থেকেই পাখির সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।

স্থানীয় দোকানি দীনেশ সাহা ও সুরেশ্বর হোটেল মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, শহরের শেখ আ. হাই সড়কের রিমঝিম সিনেমা হল থেকে শুরু করে মদিনা হোটেল পর্যন্ত সারিসারি গাছগুলোতে আশ্রয় নিয়ে থাকছে কয়েক হাজার চড়ুই পাখি। পাখিগুলোর নিরাপদ আবাস সৃষ্টি ও প্রজননের জন্য কাজ শুরু করেছে স্থানীয় পাঁচ ফোড়ন শিল্প পরিবার নামের একটি সংগঠন। স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে মাটির হাঁড়ি, প্লাস্টিকের বোতল ও টিনের কৌটা কিনে তা বেঁধে দিচ্ছেন গাছে গাছে।

পাঁচফোড়ন শিল্প পরিবারের পরিচালক শেখ মেহেদী হাসান জিকো, জ্যোতি হালদার ও সদস্য নয়ন পোদ্দার বলেন, গাছগুলোতে কোনো বাসা নেই, গাছের ডালে ডালে পাখিগুলো থাকছে। তাই তাদের নিরাপদ আবাস ও প্রজননের জন্য মাটির হাঁড়ি, টিনের কৌটা ও প্লাস্টিকে উপকরণ দিয়ে বাসা তৈরি করে তা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। গাছে বেঁধে দেওয়া এ বাসাগুলো পাখির প্রজননে সহায়ক হবে।

এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চড়ুই পাখি এখন বিলুপ্তির পথে। তাদের প্রজনন ও সুরক্ষায় সবার সহায়ক ভূমিকা পালন করা উচিত। আশা করবো পাঁচফোড়নের মতো অন্যরাও পাখি ও প্রাণীর প্রতি যত্নশীল হবেন। তাতে পরিবেশ এবং প্রকৃতির ভারসম্য বজায় থাকবে।

২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি আত্মপ্রকাশ হওয়া ৩০ সদস্যের পাঁচফোড়ন শিল্প পরিবার সমাজ সচেতনায় নানামুখী কাজ করে যাচ্ছে। মঞ্চ নাটক, বসন্ত উৎসব, ফ্রি রক্তদান, দুস্থদের ফ্রি চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মাধ্যমে বেশ সুনাম অর্জন করেছে সংগঠনটি।

আবু হোসাইন সুমন/এসআর/এমএস