দেশজুড়ে

গভীর রাতে ছিন্নমূল মানুষের গায়ে জাগো নিউজের কম্বল

সময় তখন রাত ১২টা বেজে ১০ মিনিট। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বারান্দায় এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা ঘুমিয়ে ছিলেন। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যেও গায়ে গরমের কোনো কাপড় ছিল না তার। ঠিক এমন সময় নীরবে গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিতে গিয়েই জেগে যান বৃদ্ধা আবেদা (৬৫)। সারাদিন ভিক্ষা করে অনেক ক্লান্ত তিনি। তাই রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন। চোখ খুলেই তিনি দেখতে পান গায়ে তার মোটা কম্বল জড়ানো। পাশে দাঁড়ানো কয়েকজন যুবক।কম্বল পেয়ে বৃদ্ধা অবেদা জানালেন, ডিসি সাহেবের বারান্দায় রাত কাটাই কিন্তু কেউ কখনো একটি কম্বলও দেয়নি। আজকে মনে হয় আল্লাই আপনাদের পাঠিয়েছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাত জেগে ঠাকুরগাঁও শহর ও এর আশপাশ ঘুরে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে এভাবেই কম্বল বিতরণ করা হয়।শহরের বাসস্ট্যান্ড, বাস টার্মিনাল, জজ কোর্ট চত্বর, কালিবাড়ি, চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান মানুষের মাঝে ৮০টি কম্বল বিতরণ করা হয়।কম্বল পেয়ে ঠাকুরগাঁও শহরের মোটর গ্যারেজ শ্রমিক বকুল জানান, গ্যারেজে সারারাত কাজ করতে লাগে। কয়েকদিন আগে ঠাণ্ডায় অসুস্থ হয়ে গেছিলাম। টাকার অভাবে গরম কাপড় কিনতে পারি নাই। আপনারা আমাকে কম্বলটি দিয়ে খুবই উপকার করলেন।ভ্যান চালক শামসুল আলম জানান, গরীবদের তো কেউ খবর রাখে না। সব সময় যাদের কম্বল কিনার সামর্থ্য আছে সরকারি কম্বল তারাই পায়। কিন্তু আপনারা আজ ডেকে কম্বল দিচ্ছেন ভাবতেই অবাক লাগছে।শহরে ঘুরতে ঘুরতে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গেলে চোখে পড়ে একজন গাছের নিচে শুয়ে আছে। তার কাছে গিয়ে জানা গেল বাড়ি-ঘর না থাকায় প্রতিদিন কাজ শেষে এখানেই থাকা হয়। সেই যুবক জানান, কেউ রাতের বেলা এসে ডেকে কম্বল দিবে, ভাবতেই পারছি না মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।এভাবেই শহর জুড়ে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করলেন দেশের সুনামধন্য অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ।কম্বল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা অনলাইন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু, জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি রবিউল এহ্সান রিপন, বাংলামেইলের জেলা প্রতিনিধি মাসুম রেজা, জেলা মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহদাৎ হোসেন ও জীবন হক।রবিউল এহ্সান রিপন/এমএএস/এবিএস