আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জামালপুরে মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। তবে দাম কম হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি নেই। তারা বলছেন, চাষের খচর বাড়লেও এবার মরিচের দাম অনেক কম। এতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৫০ হেক্টর জমি। তবে আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৪৯২ হেক্টর জমি। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৫১৫ টন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, অসময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মরিচ গাছ মরেনি। রোগবালাইয়ের আক্রমণও কম হয়েছে। ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম নেই। একই মরিচ তারা গতবার বিক্রি করেছেন ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরে। এবার বিক্রি করছেন ২০-২৩ টাকা কেজি দরে। সার, বীজ, কীটনাশক এবং শ্রমিক খরচ মিটিয়ে যে দামে মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে তাদের লাভের বদলে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
মেলান্দহ উপজেলার মরিচ চাষি আনন্দ বলেন, ‘বিঘা প্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। গতবারের তুলনায় ফলন বেশ ভালোই হয়েছে। কিন্তু বাজারদর খুবই খারাপ। কিছুদিন ধরেই বাজারদর ২০-২৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। সামনে কেমন দাম হবে সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছি। মনে হচ্ছে লোকসান হবে।’
মরিচক্ষেতে কাজ করা রোজিনা বেগম জানান, মরিচের দাম ধীরে ধীরে বাড়ছে। আগে তারা বিক্রি করতেন ১২-১৪ টাকা কেজি দরে। এখন বিক্রি করছেন ২২-২৩ টাকা কেজি দরে। এ দাম সামনে আরও বাড়তে পারে।
সরিষাবাড়ী উপজেলার আরামনগর বাজারের আদর্শ বাণিজ্যালয়ের আড়তদার বাবু বলেন, প্রতিবছর এ সময় মরিচের দাম কম থাকে। গত এক সপ্তাহ যাবত কাঁচামরিচের বাজার ১ থেকে ৩ টাকা ওঠানামা করছে। পাইকারি ২২-২৩ টাকা আর খুচরা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা জাগো নিউজকে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তুলনামূলক গতবারের চেয়ে এ বছর মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। যেহেতু মরিচ একটি পচনশীল কৃষি পণ্য সেহেতু সামনে যদি বৃষ্টি কিংবা অন্য কোনো ঝামেলা না হয় ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হতে পারে। যদি কুয়াশা বেশি পড়ে কিংবা আবহাওয়া বিরূপ হয় তাহলে গাছের গোড়ায় পচন ধরার সম্ভাবনা থাকে। তখন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ইসলামপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মরিচের আবাদ হয়। চলতি বছরেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ীতেও মরিচের আবাদ হয়।
এসজে/জেআইএম