রাষ্ট্রদ্রোহ, মানহানির মতো অভিযোগে জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টিকে গণমাধ্যমের উপর আঘাত নয় বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলছেন, এটা ফৌজদারি মামলাও নয়। এটা হলো দেওয়ানি মামলা। আধুনিক আইনি ব্যবস্থাসম্পন্ন সবদেশেই এটা ঘটে। আপনি যদি কারও ক্ষতি করেন, সংক্ষুব্ধ পক্ষের আপনার বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করার সব ধরনের অধিকার রয়েছে।শুক্রবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এসব কথা বলেছেন জয়। এর আগে ৫ ফেব্রুয়ারি একটি স্ট্যাটাসে মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে তার বিচার চেয়েছিলেন জয়। বিচার চাওয়ার কারণ হিসেবে জয় বলেছিলেন, ‘একটি প্রধান সংবাদপত্রের সম্পাদক সামরিক বিদ্রোহে উস্কানি দিতে যে মিথ্যা সাজানো প্রচারণা চালায় তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা।’শুক্রবারের স্ট্যাটাসে জয় আরো লিখেছেন, মাহফুজ আনাম যদি হয়রানি বোধ করেন, মিথ্যা অভিযোগে ১১ মাস জেলে কাটানোর অনুভূতি কেমন সম্ভবত তা তার জানা উচিৎ।জয়ের স্ট্যাটাসে আরো বলা হয়েছে, ‘আমাদের “সুশীল সমাজ”এর কিছু অংশ এবং কিছু সংবাদপত্রের সম্পাদক আমার মায়ের বিরুদ্ধে মাহফুজ আনাম কর্তৃক চালানো মিথ্যা সাজানো প্রচারণার স্বীকারোক্তির পর তার বিরুদ্ধে হওয়া দেওয়ানি মানহানির মামলাগুলোর সমালোচনা করছেন। আমাদের সরকার তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেনি। মামলাগুলো সবই দেওয়ানি প্রকৃতির, যা খেসারত এবং আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবীতে দায়ের করা।’ইংরেজি ও বাংলা দু’ভাষাতেই লেখা স্ট্যাটাসের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, ‘তাই আমি জানতে চাই, যা কিছু ঘটেছে তাতে গণমাধ্যমকে দায়মুক্তি দেয়া যায় কিনা? মাহফুজ আনাম স্বীকার করেছেন কেবল একটিই নয়, এসব মিথ্যা কাহিনী ধারাবাহিকভাবে তিনি আমার মায়ের বিরুদ্ধে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা এবং একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চালিয়েছেন। তার কর্মকাণ্ডের ফলে আমার মা তার এই বয়সে ১১ মাস জেলে কাটিয়েছেন। এত সবকিছুর পর তিনি বলেন, “ওহহো, আমার ভুল হয়েছে!” এবং আমাদের সেসব ভুলে যেয়ে এগুতে হবে? আমার মা, আমার পরিবার এবং আমাদের দল আওয়ামী লীগের পক্ষে কোনই বিচার থাকবে না? সেখানে কোনই জবাবদিহিতা থাকা উচিৎ না?’‘রাজনীতিকদের আইন মেনে চলতে হবে নয়তো জেলে যেতে হবে, পুলিশকে আইন মেনে চলতে হবে নতুবা জেলে যেতে হবে, কিন্তু মিথ্যা কাহিনী লেখার জন্য কোন আইন থাকবে না। দেওয়ানি আইনে রাজনীতিক এবং বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের একমাত্র আশ্রয় হচ্ছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া। অন্য কিছু যদি নাও হয়, শুধুমাত্র উকিল খরচ এবং আদালতে যাওয়ার সময় বিবেচনায় একজন সাংবাদিককে মিথ্যা ছাপানো এবং অন্যের সুনাম ক্ষুণ্ণের আগে ২য় বার ভাবানো উচিৎ। যদিও, এই গোত্রের লোকেরা এটুকু স্বল্পমাত্রার জবাবদিহিতাও চায় না। তার বদলে তারা একে গণমাধ্যমের উপর আঘাত আখ্যা দিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করতে চায়।’মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়েরের ঘটনায় ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্ট। সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক এই সংগঠনটি গত মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে মামলা দায়ের করা হচ্ছে; এর মাধ্যমে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের কণ্ঠ চেপে ধরা ও স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
//
Several of our “civil society” and newspaper editors are criticizing the civil defamation lawsuits filed against Mahfuz...
Posted by Sajeeb Wazed on Thursday, February 18, 2016এনএফ/এবিএস