দেশজুড়ে

ধান কুড়িয়ে চলে অরুণের সংসার

বৃদ্ধা মা, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অরুণ সরকারের পরিবার। তার দিনমজুরির আয় দিয়ে চলে পাঁচ সদস্যের এ পরিবার। অভাব-অনটনের মধ্যদিয়ে দিন যায়। কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে জীবন পার করেন তারা।

অরুণ সরকার মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার বড়বাড়ি গ্রামে বাসিন্দা। বসতঘর ছাড়া তার কোনো জমি নেই। আমনের মৌসুমে পাশের খামারবন্দ মাঠে ধান কুড়িয়ে সংরক্ষণ করেন তিনি। সে ধান দিয়ে ৪৫-৫ মাস চলে যায় তার পরিবারের।

প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলার কাউয়াদীঘির সংলগ্ন মাঠে দেখা মিলে অরুণসহ তার পরিবারের সদস্যদের। বিকেল ধান নিয়ে বাড়ি ফিরেন তারা। প্রতিদিন ২০-২৫ কেজি পর্যন্ত ধান সংগ্রহ করতে পারেন এ পরিবার। ইঁদুরের গর্ত, কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে কাটা ধানের ফেলে দেওয়া শীষ থেকে এসব ধান সংগ্রহ করেন অরুণ ও তার পরিবার।

এ বিষয়ে অরুণ সরকার জাগো নিউজকে বলেন, কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটে নেওয়ার পর কিছু শীষ মাটিতে পড়ে যায়। আমরা ভূমিহীন দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা এসব ধান সংগ্রহ করি। মৌসুমে আমাদের ঘরেও দেখা যায় কয়েক মণ ধান উঠেছে।

বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা অরুণ সরকারের মেয়ে কৌশল্লা রানী বলেন, ইঁদুর বিভিন্ন সময় জমির ধান কেটে নিয়ে গর্তে জমা করে রাখে। আমি আমার বাবাকে সহযোগিতা করছি।

অরুণ সরকারের স্ত্রী বাসন্তী রানী বলেন, স্বামীর সঙ্গে মাঠে ঘুরে মাটিতে পড়া ধানের শীষ সংগ্রহ করছি। ধান কুড়ানি আবহমান বাংলার ঐতিহ্য। কুড়ানো এ ধান এক সময় কয়েক মন হয়ে যায়। তা দিয়ে আমাদের কয়েক মাসের খাবার ব্যবস্থা হয়।

একই গ্রামের সিপা বেগম বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অংশ ধান কুড়ানি। এক সময় ছোট শিশুরা ধান কুড়িয়ে জমা করত। সে ধানের চাল দিয়ে পিঠা-পুলি তৈরি করা হত। এখন আর এগুলো দেখা যায়নি।

মুড়াউড়া গ্রামের সমাজকর্মী সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কুড়ানো ধানে গ্রামের অনেক পরিবার অভাব মেটানোর সুযোগ পায়। ধানের মৌসুমে তাদের ঘরেও ৬-৭ মণ ধান জমা হয়।

আব্দুল আজিজ/আরএইচ/এমএস