দেশজুড়ে

মাগুরায় অযত্নে পড়ে আছে শহীদ মিনারগুলো

অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে মাগুরার শহীদ মিনারগুলো। আর যেটুকু আছে তা কখনো গরু-ছাগল, দোকানিসহ প্রেমিক যুগলেরা দখল করে রাখে। ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের দিন না হয়ে পরিণত হয়েছে উৎসব আনন্দের দিন হিসেবে। শিশুরা জানেই না এর ইতিহাস-ঐতিহ্য। বছরের একটি মাত্র দিনে চকচকে ঝকঝকে দেখা যায় শহীদ মিনার। বাকী ৩৬৪ দিনই থাকে ময়লা, আবর্জনা আর বাদামের খোসার দখলে। ফলে ২১ ফেব্রুয়ারি শ্রদ্ধা নিবেদনের দিন না হয়ে পরিণত হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। আবালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুলতানা আরজু জাগো নিউজকে জানান, মাগুরার শহীদ মিনারগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন না থাকায় কোমলমতি শিশুরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। অবার অনেকেই জানে না এটা কি জিনিস। এছাড়া শহর থেকে একটু দূরের স্কুল কলেজে প্রতিষ্ঠিত শহীদ মিনারগুলোর উপর কেউ কেউ রীতিমতো দোকান সাজিয়ে বসেন। স্থানীয় প্রভাবশালী লোকদের দাপটে শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এসব শহীদ মিনারের উপর কাপড় নাড়াসহ চলে ধান শুকানোর কাজ। কোথাও কোথাও অযত্নে অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে শহীদ মিনারের অবকাঠামাে। আবালপুর টেকনিক্যাল কলেজের ছাত্রী সীমা বলেন, দিবসটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সেভাবে অর্থবহ করে তোলা যায়নি। শুধু শহরের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কিছুটা সচেতনতা দেখা গেলেও গ্রাম-গঞ্জের ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে অজ্ঞ। আবার শহীদ মিনার থেকে কোন কোন স্কুল-কলেজ দূরে হওয়ায় শুধু স্কুল-কলেজের স্টাফরাই ফুল দিতে আসেন শহীদ মিনারে। ফলে অনেক ছাত্র-ছাত্রী দিবসটি সম্পর্কে কিছুই শিখতে পারে না।সাকেব অধ্যক্ষ মাগুরা সরকারি কলেজ ও ভাষাসৈনিক মো. মাহফুজল হক নিরো জাগো নিউজকে জানান, যেসব ভাষা সৈনিকেরা আজও বেঁচে আছেন তাঁদের দুখের শেষ নেই। মৃত্যুর আগে একটি মাত্র চাওয়া যেন যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় ভাষাসৈনিকদের আত্মার প্রতি। তিনি আরও বলেন, শহীদ মিনারগুলো ডাস্টবিন থেকে উঠে এসে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। বাঙালি প্রথম মুক্তির সাধ গ্রহণ করে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে যা পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। সেই ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে প্রতিটি স্কুল, কলেজে স্মৃতিসৌধ তৈরি ও প্রথিমিক স্তর থেকেই পাঠ্যপুস্তকে অর্ন্তভুক্ত করতে হবে।আরাফাত হোসেন/এসএস/এমএস