রাত পোহানোর আগেই মাছবোঝাই নৌকা ভিড়তে শুরু করে ধনু নদীর তীরে। কিশোরগঞ্জের নদ-নদীসহ হাওর ও পার্শ্ববর্তী জেলা নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জের হাওরের মাছ বিক্রেতারা আসেন কিশোরগঞ্জের এ বালিখোলা বাজারে। এরপর নৌকা থেকে মাছ তোলা হয় ঘাটে। পাইকারি এ মাছের বাজারে মেলে রুই, কাতল, শৌল, বোয়াল, আইড়, চিংড়িসহ নানা জাতের মাছ।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ধনু নদীর পাড়ে বালিখোলা মিঠাপানির মাছ বাজার। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে ভোরেই সরগরম হয়ে ওঠে বাজার। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। চার ঘণ্টায় এই পাইকারি বাজারে অন্তত তিন কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয় বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে বালিখোলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, তরতাজা মাছের সমাহার। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে মুখর পুরো মাছ বাজার। প্রতিযোগিতামূলক দরদামেই জেলে থেকে শুরু করে ফিশারির মালিকদের কাছ থেকে মাছ কেনেন পাইকাররা। এরপর চলে যায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
স্থানীয়রা জানান, এখন নদ-নদীর পানি কমছে। তাই বেড়েছে মাছের সরবরাহ। মাছের দামও কিছুটা কম। বাজারে বোয়াল ৩০০ থেকে ৭০০, রুই সাড়ে ৫০০, কাতল ৫০০, চিংড়ি ৭০০ এবং ছোট মাছ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বালিখোলা বাজারের সভাপতি মো. সিদ্দিক মিয়া জাগো নিউজকে জানান, দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ বাজারের ৫০টি আড়তে প্রতিদিন প্রায় তিন কোটি টাকার মাছ কেনাবেচা হয়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রিপন কুমার পাল জানান, কিশোরগঞ্জের হাওরের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে বালিখোলা বাজারে মাছ আসে। তরতাজা মিঠাপানির মাছের কদর সবসময়ই বেশি। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে মাছ ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
প্রায় দেড়শ বছর ধরে করিমগঞ্জ উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের বালিখোলা নামক স্থানে ধনু নদীর পাড়ে এ বাজার বসছে। শুকনো মৌসুমে প্রায় ৬ মাস পাইকারি এ বাজারে মাছ বেচাকেনা হয়।
এফএ/এমএস