একুশে বইমেলা

অনুদান দিয়ে যথার্থ সাংস্কৃতিক জাগরণ সম্ভব নয়

‘বাঙালি সংস্কৃতির অবিনাশী শক্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েই আমাদের ধর্মীয় মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদের মতো শত্রুদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রকৃতি জাগরণ চাইলে এক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে। শুধু অনুদান দিয়ে যথার্থ সাংস্কৃতিক জাগরণ সম্ভব নয়।শনিবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণ : সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভাটির আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক-গবেষক মফিদুল হক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বদিউর রহমান এবং গোলাম কুদ্দুছ। সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী।বক্তারা বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালির সাংস্কৃতিক সংগ্রাম পরিপূরক হয়েছে রাজনৈতিক সংগ্রামের। ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক অভিযাত্রায় বাঙালি জাতিসত্ত্বা ও মূল্যবোধ বিনির্মাণে সংস্কৃতিকর্মীরা পালন করেছেন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা।মফিদুল হক তাঁর প্রবন্ধে বলেন, সমন্বয়ের বার্তা বাঙালি জাতিসত্ত্বা উদার-অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলে প্রোথিত রয়েছে, তবে এর উৎপাটনের শক্তিও সমাজে প্রবল এবং অন্ধতার এই শক্তি কখনো কখনো রাষ্ট্রক্ষমতার অধিকারী হয়ে তছনছ করে দেয় গোষ্ঠী ও জাতির জীবন। এর চরম প্রকাশ আমরা দেখেছি একাত্তরে যখন পাক-সামরিক শাসকেরা তাদের মিত্র ধর্মান্ধ মৌলবাদের সহযোগিতায় গণহত্যাযজ্ঞে অবতীর্ণ হয়েছিল এ-দেশের মাটিতে। সভাপতির বক্তব্যে কামাল লোহানী বলেন, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সমস্যা যেমন আছে, আছে ব্যাপক সম্ভাবনাও। এখন সময় এসেছে সেই সম্ভাবনাকে খুঁজে বের করার। আর এজন্য চাই জাতি হিসেবে আমাদের গভীর আত্মবিশ্বাস। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জাগরণই পারে সকল অপশক্তিকে তাড়াতে।সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ফকির সিরাজের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ পাঠ করে শিশুশিল্পী ফারহান সাদিক খান সামি। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন আব্দুল মতিন (তবলা), শেখ আবু জাফর (বাঁশি), প্রদীপ কুমার কর্মকার (প্যাড) এবং আনোয়ার সাহদাত রবিন (কি-বোর্ড)। এদিকে মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৩৭টি। এমএইচ/এসএইচএস/আরআইপি