নাতির কোলে উঠে ভোট দিতে কেন্দ্রে পৌঁছান দাদি জহুরা বেগম (১১০)। কিন্তু জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নিজের ইচ্ছা মতো ভোট দিতে না পেরে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শতবর্ষী এই নারী। ইভিএম মেশিনে তার আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে পারেননি তিনি।
তিনি বলেন, জীবনে মেলা ভোট দিছি। অহন আবার ভোট দিতে এলাম। তাও দিতে পারলাম না। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা ভোটের আগে মেলা কথা কয়। পরে মনে থাহে না। পাস অইলে যেন মানুষের কাজ করে। দেশের কাজ করে। আমগোর পোলাপান আর নাতি-নাতনিরা যেন সুবিধা পায়।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ছাব্বিশ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ নম্বর ভোট কেন্দ্রে নাতি সিদ্দিক মাদবরের কোলে উঠে ভোট দিতে যান তিনি।
জহুরা বেগমের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের ছাব্বিশ পাড়া গ্রামে। তার স্বামী মৃত সাহেব আলী খা মারা গেছেন দুই যুগ আগে। তার তিন ছেলে এক মেয়ে।
জহুরা বেগমের মতোই বয়সের ভারে কুজো হয়ে গেছেন আহম্মদ আলী মাল (৯০)। দুই যুবকের কাঁধে ভর দিয়ে ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে আসেন। কিন্তু তারও হাতের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে পারেননি। নিজের ইচ্ছামতো ভোট দিতে না পেরে তিনিও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘কী দিন এলোরে বাপু, এতো কষ্ট করে ভোট দিতে আইলাম, কিন্তু ভোট দিতে পারলাম না। মেশিনে বলে আঙ্গুল মেলে না। পরে আবার যাইতে কইছে। আমার শরীরটা ভালা না। কিভাবে যাব?’
আহম্মদ আলী মালের বাড়ি পূর্ব ছাব্বিশ পাড়া গ্রামে। তিনি মৃত জোনাবআলী মালের ছেলে। তার তিন ছেলে পাঁচ মেয়ে।
জাজিরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) উপজেলার মূলনা ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হওয়ায় যাদের আঙ্গুলের ছাপ মেলেনি তাদের ভোট দুপুরের পর নেওয়া হয়েছে।
ছগির হোসেন/এফএ/জিকেএস