বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে সব নতুন বই তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও বরিশালের অধিকাংশ স্কুলেই একটি বা দুইটি করে বই দিয়ে উৎসব করা হয়েছে। আর একটি দুইটি বই পেয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হাসির চেয়ে মলিন মুখেই বাড়ি ফিরছে।
রোববার (১ জানুয়ারি) সারা দেশের সঙ্গে বরিশালেও পালিত হয় বই উৎসব। নগরীর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে সকাল সাড়ে ৯টায় বই উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। এরপরই জেলার সব স্কুলে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার উৎসব।
এদিকে, বই উৎসব শুরু হলেও কোনো স্কুলেই শিক্ষার্থীদের হাতে শতভাগ বই দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অধিকাংশ স্কুলেই ক্লাস ভেদে একটি দুইটি করে বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা।
নগরীর নব আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে মাত্র একটি করে বই দেওয়া হয়েছে। এতে খুদে শিক্ষার্থীদেরা অনেকটা মলিন মুখে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।
এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন বেগম জাগো নিউজকে বলেন, বই উৎসবের প্রথম দিনে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত সব ক্লাসের শিক্ষার্থীদের একটি করে নতুন বই দেওয়া হয়েছে। যেভাবে বই পেয়েছি সেভাবে দেওয়া হয়েছে। নতুন বই পেতে দেরি হলে পুরাতন বই দেওয়া হবে। এজন্য পুরাতন বই সংগ্রহ করা হয়েছে।
একই অবস্থা নগরীর কিশোর মজলিস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। সেখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত যে সব শিক্ষার্থীর এক থেকে দশ পর্যন্ত রোল শুধু তাদের একটি করে নতুন বই দেওয়া হয়েছে। দশ নম্বর রোলের পর থেকে আর বই দেওয়া হয়নি। এমন অবস্থা বরিশালের সব স্কুলে।
কিশোর মজলিস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারিয়ার অভিভাবক বলেন, বই উৎসবের জন্য স্কুলে গিয়েছিলাম। কিন্তু যাদের রোল এক থেকে দশ পর্যন্ত শুধু তাদের একটি করে নতুন বই দেওয়া হয়েছে। আমাদের আগামীকাল যেতে বলেছে, তাও পুরাতন বই আনতে। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের দিয়েছে একটি করে পুরাতন বই।
নগরীর মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতেও একই অবস্থা। এআরএস বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুহিন আক্তার জানান, বছরের প্রথম দিন সব বই দেওয়ার কথা থাকলেও পেয়েছি ছয়টি। বাকি বই কবে দেওয়া হবে তা জানানো হয়নি।
সে আরও জানায়, যে বই দেয়া হয়েছে তার মধ্যে কোনো গ্ৰুপের বই নেই। সব কমন বিষয়ের বই। যেমন বাংলা, বাংলা ব্যাকরণ, ইংরেজি, শারীরিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও ক্যারিয়ার শিক্ষা। সব বই না দিলেও ২ জানুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্কুল থেকে।
বই উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে শতভাগ নতুন বই দিতে না পারার বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চ. দা.) মোহন লাল দাস জাগো নিউজকে বলেন, মাত্র পঞ্চাশ ভাগ বই পেয়েছি। তবে বাকি বই আগামীকালের মধ্যে আসবে। আশাকরি ৭ জানুয়ারির মধ্যে শতভাগ নতুন বই তুলে দেওয়া যাবে।
এএইচ/জিকেএস