চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি সংসদীয় আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করায় আসন দুটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদকাল মাত্র ১১ মাস বাকি থাকলেও উপ-নির্বাচন নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। তাতে রীতিমতো ঘি ঢালেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি।
হঠাৎ রাজনীতির মাঠে নামেন এ নায়িকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (ভোলাহাট-গোমস্তাপুর-নাচোল) আসনে নৌকার প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কেনেন এবং জমা দেন তিনি। নির্বাচন সামনে রেখে মাঠে জনসংযোগেও নামেন মাহি। এতে জেলার রাজনীতি সরগরম হয়ে ওঠে।
তবে আসনটিতে মাহিয়া মাহিকে মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। তার চাওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন জিয়াউর রহমান জিয়া। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।
এ আসনটিতে সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন বিএনপির প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। তার কাছে পরাজিত হন নৌকার প্রার্থী জিয়াউর রহমান জিয়া।
আরও পড়ুন>> উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন: আ’লীগ তিন, ১৪ দল দুই ও উন্মুক্ত একটি
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান জিয়াউর রহমান। তবে সেই নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী সৈয়দ মনজুর হোসেনের কাছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও নৌকা পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। বিএনপির প্রার্থী আমিনুল ইসলামকে প্রায় ৩১ হাজার ভোটে হারিয়ে জয়ী হন জিয়াউর রহমান।
২০১৪ সালে দলের মনোনয়ন পাননি তিনি। ২০১৮ সালে আবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান জিয়াউর। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আমিনুল ইসলামের কাছে হেরে যান তিনি।
অন্যদিকে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ পদত্যাগ করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনও শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। তার আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন>> নৌকার প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করবো: মাহিয়া মাহি
আব্দুল ওদুদ ২০০৮ সালে বিএনপির প্রার্থী হারুনুর রশিদকে হারিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় এ আসনে পুনরায় এমপি নির্বাচিত হন। তবে ২০১৮ সালে আব্দুল ওদুদ বিএনপির প্রার্থী হারুনুর রশিদের কাছে পরাজিত হন।
রোববার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তাদের মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক শূন্য পাঁচটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: মাহিয়া মাহির নির্বাচনী পোস্টার ভাইরাল
দলের মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- শূন্য তিন আসনে আওয়ামী লীগ এককভাবে প্রার্থী দিয়েছে। দুটি আসন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গী ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের জন্য ছেড়ে দিয়েছে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি উন্মুক্ত রেখেছে ক্ষমতাসীন দল।
গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সাত এমপি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পরদিন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন। এর ফলে বিএনপির এমপিদের আসনগুলো শূন্য হয়। সংরক্ষিত নারী আসন বাদে বাকি ছয় সংসদীয় আসনে ১ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সোহান মাহমুদ/এএএইচ