কুড়িগ্রামের মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালামের বিরুদ্ধে বিধি বহির্ভূতভাবে পদ দখল, অনিয়ম, অসদাচরণ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) দুুপুরে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজ কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ।
এসময় কলেজের সিনিয়র শিক্ষক আনিছুর রহমান, শিক্ষক প্রতিনিধি রাম গোপাল সরকার, প্রভাষক উত্তম কুমার রায়, সহকারী অধ্যাপক মহসিন আলী, আব্দুর রউফ, জয়তী রুদ্র, গ্রন্থাগারিক গৌতম কুমার, কর্মচারী রিয়াজুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষক প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম টুকুর আনুকূল্যে সিনিয়র দুই শিক্ষককে টপকিয়ে বিধি বহির্ভূতভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ দখল করেন। নিয়ম অনুযায়ী তার এ নিয়োগপ্রাপ্তির ছয়মাস অতিক্রান্ত হলেও নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ না দিয়ে নিজেই পদটি দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে গোপনে কলেজে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের পাঁয়তারা করছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম টুকু স্নাতক পাস না হয়েও মিথ্যা তথ্য ও জাল সনদ দিয়ে সভাপতির পদটি ধরে রেখেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তার স্নাতক পাসের সনদ শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক ভুয়া প্রমাণিত হলেও তিনি জোর করে পদটি ধরে রেখেছেন। এতে জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষের স্বেচ্ছাচারিতায় নন-এমপিও শিক্ষকরা ছয় মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
হারুন অর রশিদ বলেন, কলেজের এইচএসসি বিজ্ঞান শাখায় ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ৩০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসব অনিয়মের কারণে কলেজের দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনার্স ও ডিগ্রি পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে অধ্যক্ষের অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবিদার আমি। কিন্তু আমার এবং তালিকায় থাকা দ্বিতীয় শিক্ষকের কাছে কোনো অনাপত্তিপত্র গ্রহণ না করেই বিধি বহির্ভূতভাবে সিনিয়রের তালিকায় তিন নম্বরে থাকা আব্দুস ছালামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেন। বিষয়টি আমি লিখিতভাবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি।’
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস ছালাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। নিয়ম মেনেই আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সভাপতি টুকুর ভুয়া সনদের বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই।
ফজলুল করিম ফারাজী/এসআর/জিকেএস