পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় কেরানীপাড়ার সুইচিং মং রাখাইন হত্যা মামলা প্রত্যাহারে বাদীকে ভয় ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদারকে আদালতে তলব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান এ আদেশ জারি করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার সুইচিং মং রাখাইন হত্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য নিহতের ছোটভাই চুচিং মং রাখাইনের বাড়িতে প্রবেশ করে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি দেন। এ ঘটনায় ২০২২ সালের ৩ মার্চ মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা করেন চুচিং মং রাখাইন। পরে আদালত পটুয়াখালী সিআইডিকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় সিআইডি পরিদর্শক বাহাউদ্দিন ফারুকী দীর্ঘ তদন্তের পর ঘটনার সত্যতা মিলেছে মর্মে সংশ্লিষ্ট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদারকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন।
অনুসন্ধানে জান যায়, কুয়াকাটা পৌর মেয়র এক সময় জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সে সময় কুয়াকাটা পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তিনি নির্বাচন না করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এর পর কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন।
তবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় আওয়ামী লীগের কোনো পদ-পদবী জোটেনি তার ভাগ্যে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করতে মরিয়া এই আলোচিত মেয়র।
অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাশীন দলে সদস্য না হয়েও কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র হওয়ায় প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যবহার করে কুয়াকাটায় তিনি জমি কেনাবেচার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠন করেছেন। রাখাইন সম্প্রদায় এবং স্থানীয়দের জমি জোরপূর্বক কেনাবেচার মধ্যস্থতায় ব্যস্ত মেয়র আনোয়ার। আর এভাবেই বিপুল অর্থ বৈভবের মালিক হয়েছেন তিনি। এ কারণে রাখাইনদের সঙ্গে জমিজমা বেচাবিক্র নিয়েই পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের বিরোধের সূত্রপাত।
তব এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, সুইচিং মং রাখাইন এবং তার ছোটভাই চুচিং মং রাখাইনের সঙ্গে আমার কোনো পরিচয় নেই, আমি তাদের চিনিও না। আমি কাউকে কোনো হুমকি দেইনি। আর আমার সঙ্গে রাখাইনদের কোনো বিরোধও নেই। একটি বিরোধী পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অভিযোগ করছে।
২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর কুয়াকাটা সৈকতের ঝাউবাগান সংলগ্ন এলাকার একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় সুইচিং মং রাখাইনের (৬০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আব্দুস সালাম আরিফ/এফএ/এমএস