ভ্রমণ

জঙ্গল নদী আর সাগর দর্শনে ছুটিতে সুন্দরবনে তারা

বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী, কুলু কুলু তানে বয়ে চলা নদী আর সাঁ সাঁ শব্দের উচ্ছ্বাসে আছড়ে পড়া সাগরের ঢেউ -এই তিনটি একই সঙ্গে দেখতে যেতে হয় সুন্দরবনে। বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলের প্রশস্ত বনভূমি সুন্দরবন বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম। পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি দেখতে এবারের তিনদিনের ছুটিতে অনেকেই বেড়াতে গিয়েছিলেন সেখানে। তাই নিরিবিলি ওই এলাকা মানুষের পদভারে হয়ে উঠেছিল বাংলার গৌরবের সুন্দরবন। লঞ্চ থেকে নেমে ট্রলারে করে গভীর অরন্যে যাচ্ছেন পর্যটকরাতাই সেখানকার কটকা অভয়ারণ্য ও জামতলা সমুদ্র সৈকত, হিরন পয়েন্ট, দুবলার চর, করমজল পর্যটন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন অভয়ারণ্য ও স্থানে পর্যটকদের ভিড় ছিল। অনেকে সপরিবার আবার কেউ কেউ বন্ধুবান্ধব-আপনজন নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন সুন্দরবন। আর ঘ্রান নিয়েছেন নদীর, দেখেছেন সবুজ প্রকৃতি আর অবারিত জোছনা ভরা মায়াবি রাত। কেউ কেউ আপনজনের পাশে চাঁদের আলোয় বলেছেন না বলা কথা। আবার নৌকায় পাশাপাশি বসে কারো কারো অব্যক্ত কথাগুলো প্রকাশিত হয়েছে কোনো কিছু না বলেই। সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মহান একুশে ফেব্রুয়ারিসহ তিন দিনের অমুল্য ছুটি কাটাতে রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলে দলে গিয়েছিলেন সুন্দরবনে। এমনকি বিদেশিদেরও আনাগোনা ছিল ব্যাপক। রাজধানী উত্তর বাড্ডার একদল ভ্রমন পিপাসু এই ছুটি কাজে লাগিয়ে দলবল নিয়ে বেরিয়ে পরেছিলেন সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ এবং বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি দর্শনে। দলে ছিল বিভিন্ন বয়েসি নানা মানুষ। সু্ন্দরবনের নদীগুলোতে এভাবেই ঘুরে বেড়ায় কুমির সুন্দরবনের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে শরণখোলা রেঞ্জের অধীন সমুদ্রের তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্র কটকার অভয়ারণ্যে কথা হয় দলটির উদ্যোক্তা রাসেল, লিটন, মইনুল ও আফজালের সঙ্গে। তারা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা নিরাপত্তার কারণে দলবল নিয়ে সুন্দরবন এসেছি। ফলে বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারছি নির্ভয়ে। যা একা যাওয়া সম্ভব না। এতে খরচও কম পরে। তবে বাঘের আক্রমনের ভয় সব সময় থাকেই। সুন্দরবনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এ ছাড়া নানান জাতের পাখি, কুমির, শুশক, শান্ত প্রকৃতি, মনোরম চিত্রা হরিণের দল এবং বিবিধ রকমের বণ্য প্রাণীর উপস্থিতির কারণে পর্যটকদের টানে। কিন্তু সবাই কি আর বাঘের দর্শন পান? ভাগ্য থাকলেই শুধু দর্শন মেলে বাঘ মামার। পর্যটক বহনকারী লঞ্চের সারেং আবদুল মতিন জাগো নিউজকে বলেন, তিনি ছয়মাস ধর চাকরি করছেন। এরই মধ্যে দুটি বাঘ দেখেছেন। বনের ভেতর নদীর কুলঘেষে আপনমনে চড়ে বেড়াচ্ছে হরিনযুগল কিন্তু আরেক সারেং মো. ওমর বলেন, গত বিশ বছর ধরে ওই এলাকায় চাকরি করেও বাঘের দর্শন পাননি তিনি। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ লোনা বন সুন্দরবনের দক্ষিণাংশের একটি সংরক্ষিত অভয়ারণ্য হিরণ পয়েন্ট। এর আরেক নাম নীলকমল। সেখানে ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ম্যাকডোলান্ড বিডি লিমিটেডের কর্মকর্তা সোলাইমান হোসেন উজ্জলের সঙ্গে কথা হয় । তিনি জানান, একই সাথে এতকিছু দেখার অভিজ্ঞতা তার আগে হয়নি। বাংলাদেশের অপরুপ মুখায়ব দেখে তিনি মুগ্ধ। তবে বাঘ না দেখতে পেয়ে কিছুটা হতাশ। এজন্য বাঘ শিকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চান তিনি। এইচএস/এআরএস/এবিএস