আইন-আদালত

হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন খুলনার ডিসি ও ইউএনও

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা নদী ও হরি নদের তীরে অবৈধভাবে স্থাপিত ১৪টি ইটভাটা উচ্ছেদের আদেশ প্রতিপালন না করায় হাইকোর্টে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন খুলনার সাবেক ও বর্তমান জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) তারা এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

ভদ্রা নদী ও হরি নদের তীরে গড়ে ওঠা ১৪টি অবৈধ ইটভাটা আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অপসারণ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার না হলে দেশের নদ-নদীগুলো দখল হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

আদালতে এদিন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন সঞ্জয় মণ্ডল। আর বিবাদীদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল ইসলাম। এর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহমেদ চৌধুরী।

মনজিল মোরসেদ জাগো নিউজকে জানান, ভদ্রা নদী ও হরি নদ দখল করে অবৈধ ইটভাটা/স্থাপনা উচ্ছেদ/অপসারণ করার বিষয়ে ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করায় এইচআরপিবির পক্ষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন দাখিল করা হয়।

আবেদন আমলে নিয়ে গত বছরের ৩০ অক্টোবর সংশ্লিষ্টদের প্রতি আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। তারপরও আদালতের আদেশ অমান্য করায় খুলনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার ও ডুমুরিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শরীফ আসিফ রহমানের ব্যক্তিগত হাজিরার আবেদন জানানো হয়।

ওই আবেদন শুনানি নিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ডিসি এবং ইউএনওকে তলব করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার তারা আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

আদালতের আদেশ অনুযায়ী খুলনার সাবেক ডিসি মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, ইউএনও শরীফ আসিফ রহমান ও বর্তমান ডিসি খন্দকার ইয়াসির আরেফিন আদালতে হাজির হন। এসময় তারা এফিডেভিট দাখিল করে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

শুনানিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের সুনির্দিষ্ট আদেশে নদ-নদী দখল করে গড়ে তোলা ১৪টি ইটভাটা উচ্ছেদ/অপসারণের নির্দেশনা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে আদেশ সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি।

অন্যদিকে বিবাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিমালিকানার কিছু জায়গা রেকর্ড থাকায় তা উচ্ছেদ করা হয়নি।

মনজিল মোরশেদ বলেন, যে সম্পত্তি রেকর্ড করা হয়েছে তা নদীর জায়গা। সুতরাং সেখানে ইটভাটা স্থাপন করা অবৈধ।

এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম