দেশজুড়ে

ভাবির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে যুবককে খুন

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে শরীফ মিয়া (২২) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় করা মামলায় কারাগারে থাকা আসামি মাজহারুল ইসলাম হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।

মাজহারুলের ভাবির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল শরীফের। এ ঘটনার জেরে শরীফকে হত্যা করেন মাজহারুল। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন মাজহারুল।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে এতথ্য নিশ্চিত করেন মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।

গত ১০ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার জয়পুর গ্রামে বাড়ির পাশে শরীফ মিয়ার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে এ ঘটনার দুদিন পর শরীফের বাবা জামরুল ইসলাম অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরে ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নামেন মোহনগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান। ঘটনার ৩৭ দিন পর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন তিনি।

আরও পড়ুন: দুই দশকেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি মদন পৌরসভায়

ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো সাক্ষী-প্রমাণ না থাকায় এ ঘটনা তদন্তে দক্ষতা ব্যবহার করা হয়েছে। প্রথমে বেশ কয়েকজনকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পরে এক নারীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জয়পুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম নামের এক যুবককে আটক করা হয়। পরে এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাজহারুলকে দুদিনের রিমান্ডে নেওয়া হলেও হত্যার বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি। পরে কারাগারে মাজহারুলের সঙ্গে তার মা দেখা করতে গিয়ে নানা কসম দিয়ে হত্যার বিষয়ে জানতে চান। এসময় মাজহারুল তার মায়ের কাছে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। এ খবর পরিদর্শক শফিকুজ্জামানের কানে পৌঁছালে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার বিষয় স্বীকার করেন মাজহারুল। পরে আদালতে হাজির করলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আরও পড়ুন: গ্রামে চোর না রাখার সিদ্ধান্ত

মাজহারুলের বরাত দিয়ে ওসি জানান, মাজহারুলের ভাবির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল শরীফের। এ ঘটনা মাজহারুলের চোখে ধরা পড়ে। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াও হয়। এতে একে অপরের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন। এরই জেরে ঘটনার কয়েকদিন আগে একটি দা বানিয়ে এনে বাড়ির পাশের একটি ক্ষেতে লুকিয়ে রাখেন মাজহারুল।

ঘটনার রাতে শরীফকে ভাবির ঘর থেকে দৌড়ে বের হতে দেখেন মাজহারুল। পিছু নিয়ে বাড়ির সামনে ক্ষেতে গিয়ে ধরে ফেলেন। এসময় শরীফ তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। তখন লুকিয়ে রাখা দা বের করে গলায় কোপ দিয়ে শরীফকে হত্যা করেন মাজহারুল। পরে বাড়ি গিয়ে স্বাভাবিকভাবে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।

ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, কোনো সাক্ষী-প্রমাণ না থাকায় এ হত্যার রহস্য উদঘাটন কঠিন কাজ ছিল। পরিদর্শক শফিকুজ্জামানের বিচক্ষণতায় এ মামলার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে।

মাজহারুল ইসলাম জয়পুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

এইচ এম কামাল/এসআর/এএসএম