দেশজুড়ে

শীতে লেপ-তোশক বিক্রির হিড়িক

শীতের শুরুতে কাজের তেমন চাপ না থাকলেও বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন নীলফামারীর লেপ-তোশক কারিগররা। দিনের পাশাপাশি রাতেও কাজ করে শেষ করতে পারছেন না তারা। এ অঞ্চলে ঠান্ডা যত বাড়ছে ততই বিক্রি বাড়ছে লেপ-তোশক। তবে গত বছরের তুলনায় তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন দোকানিরা।

সরেজমিন জেলার কয়েকটি লেপ-তোশক তৈরির দোকান ঘুরে দেখা গেলো, কথা বলারও সময় নেই কারিগরদের। একজন কারিগর দিনে প্রায় পাঁচ/সাতটি লেপ তৈরি করছেন। আবার অনেকেই দিনে তিনটি তোশক বানাচ্ছেন। চাহিদা বেশি থাকায় মহাজনরা চাপ দেওয়ায় কাজের গতি বাড়িয়েছেন কারিগররা। সেইসঙ্গে বেড়েছে তাদের মজুরিও।

আরও পড়ুন: লেপ-তোশকের চাহিদা বেড়েছে

এদিকে, লেপ-তোশকের চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে তুলার। আগে প্রতি কেজি শিমুল তুলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। এছাড়া কেজিপ্রতি প্রায় ২০ থেকে ১০০ টাকা দাম বেড়েছে কালো উল, কালো রাবিশসহ সাদা তুলায়। সেইসঙ্গে দাম বেড়েছে লেপ-তোশকের কাপড়েরও।

জেলা শহরের কালিবাড়ি এলাকার তুলা মহলের পাশে লেপ বানান আকবর আলী। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কাজ করেন লেপ-তোশক কারিগর হিসেবে।

আকবর আলী বলেন, কয়দিন আগেও তেমন কাজ ছিল না। তবে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে কাজের চাপ বাড়ছে। এখন রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করেও মহাজনের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, সচরাচর আমাদের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এই দুই মাস কাজ থাকে না। কিন্তু এবার গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছি।

আরও পড়ুন: শীতের আগমনে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

২০ বছর আগে বাবার হাত ধরে লেপ বানানো শিখেছেন জলঢাকার আনোয়ার হোসেন। এখন তিনিও একজন দক্ষ কারিগর।

আনোয়ার বলেন, আমরা আগে একটা লেপ বানাতে ১৫০ টাকা নিতাম, এখন নিচ্ছি ২৫০। এছাড়া তোশক ৩০০ আর জাজিম ৪০০ টাকা নিচ্ছি। এখন ভালোই কাজ হচ্ছে। কয়দিন আগেও বসেছিলাম।

জলঢাকা বনানী ক্লথ স্টোরের মালিক শাহীন আলম বলেন, গতবারের তুলনায় এবারে লেপ-তোশকের কাপড় বেশি বিক্রি হয়েছে। এছাড়া রেডিমেড বালিশ আমরা বিক্রি করি সেটিও বিক্রি হয়েছে। তুলনামূলক বেশি লেপ বিক্রি করেছি।

আরও পড়ুন: লেপ-তোশকের কারিগররাও শীতের কবলে

নীলফামারী এস লেপ স্টোরের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমাদের বিক্রি অনেক বেশি। আমরা নিজেই কয়েকজন কারিগর দিয়ে কাজ করাচ্ছি। এখন তুলার দাম বাড়ায় লেপের দাম একটু বেড়েছে। তবে ক্রেতার চাহিদাও বেশি। কয়েকদিন ধরে বিক্রি বেড়েছে।

রাজু আহম্মেদ/এমআরআর/এমএস