যশোরে ডা. শামারুখ মাহজাবীন সুমির লাশ পুনঃময়নাতদন্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুনঃময়নাতদন্তের জন্য সুমির লাশ কারবালা গোরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুনঃময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে লাশ পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডা. শামারুখের বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন ও পুনঃময়নাতদন্ত করা হলো। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সালামের নেতৃত্বে একটি টিম যশোর শহরের কারবালা কবরস্থানে লাশ উত্তোলনের জন্য যান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল হাসান, ডা. সুমির বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি মুন্সী রুহুল কুদ্দুস, মেডিকেল টিমের সদস্য যশোর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. হুসাইন সাফায়েত ও প্রভাষক. জেসমিন সুমাইয়া, যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইনামুল হক।লাশ উত্তোলনের পর দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মরদেহ যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, লাশ উত্তোলনের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এরপর লাশ যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ডা. শামারুখের বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মরদেহের মাথা ও গলার কাছে কিছুটা পচন ধরলেও শরীরের অধিকাংশ অক্ষত আছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে তার গলার দাগের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, শামারুখ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই তার ওপর চাপ রয়েছে। এছাড়া শুরু থেকেই এ মামলা প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। এ কারণেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করেছেন। তবে এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি মুন্সী রুহুল কুদ্দুস কিছু বলতে রাজী হননি।যশোরের সিভিল সার্জন ডা. আতিকুর রহমান খান জানিয়েছেন, যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের পুনঃময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এরপর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ পুনঃময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে সে সম্পর্কে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। প্রসঙ্গত, গত ১৩ নভেম্বর ধানমন্ডির বাসায় ‘নিহত’ হন যশোর-৫ আসনের সাবেক এমপি খান টিপু সুলতানের পুত্রবধূ ডা. শামারুখ মাহজাবিন সুমি। এ ঘটনায় ডা. সুমির বাবা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম মেয়ের শ্বশুর খান টিপু সুলতান, শাশুড়ি ও স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন। ১৪ নভেম্বর রাতে যশোর শহরের কারবালা কবরস্থানে ডা. শামারুখের লাশ দাফন করা হয়।আর গত ২৩ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ধানমন্ডি থানায় পাঠানো ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে পুনঃময়নাতদন্তের আবেদন করেন ডা. সুমির বাবা। বিষয়টি আমলে নিয়ে ঢাকা মূখ্য মহানগর হাকিম ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে লাশ উত্তোলন করে পুনঃময়নাতদন্ত প্রতিবেদন জমাদানের নির্দেশ দেন। এ নির্দেশ পেয়ে বুধবার যশোর আসেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার সিআইডির এএসপি মুন্সী রুহুল কুদ্দুস।