ফিচার

যতীন্দ্রমোহন বাগচীর প্রয়াণ দিবস

বাঁশ-বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,মাগো আমার শোলক্-বলা কাজলা দিদি কই?পুকুর ধারে লেবুর তলে,থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে,ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, একলা জেগে রই,মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?

Advertisement

কবিতার রচয়িতা যতীন্দ্রমোহন বাগচী। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি কবি ও সম্পাদক। ১৮৭৮ সালের ২৭ নভেম্বর নদিয়া জেলার জমশেরপুরে জমিদার পরিবারে (বর্তমান বাগচী জমশেরপুর) জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস বলাগড় গ্রাম, হুগলি।

সারদাচরণ মিত্রের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে কলকাতা কর্পোরেশনে নাটোর মহারাজের ব্যক্তিগত সচিব ও জমিদারির সুপারিনটেন্ডেন্ট পদে এবং কর কোম্পানি ও এফ. এন গুপ্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। বহু সাহিত্যিক পত্রিকায় গঠনমূলক অবদান রেখেছেন। ১৯০৯ থেকে ১৯১৩ পর্যন্ত মানসী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯২১ এবং ১৯২২ সালে তিনি যমুনা পত্রিকার যুগ্ন সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ পূর্বাচল পত্রিকার মালিক এবং সম্পাদক ছিলেন। তার রচনায় তার সমকালীন রবীন্দ্র সাহিত্যের প্রভাব লক্ষ্য করে যায়। তাকে রবীন্দ্র পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের একজন প্রধান সাহিত্যিক হিসেবে বিবেচনা করে হয়।

পল্লী-প্রীতি যতীন্দ্রমোহন বাগচীর কবিমানসের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। ‘পথের পাঁচালী’র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কবি জীবনানন্দ দাশের মত তার কাব্যবস্তু নিসর্গ-সৌন্দর্যে চিত্ররূপময়। গ্রাম বাঙলার শ্যামল স্নিগ্ধ রূপ উন্মোচনে তিনি প্রয়াসী হয়েছেন। গ্রাম জীবনের অতি সাধারণ বিষয় ও সুখ-দুঃখ তিনি সহজ সরল ভাষায় সহৃদয়তার সংগে তাৎপর্যমণ্ডিত করে প্রকাশ করেছেন।

Advertisement

কাজলা দিদি ছাড়াও শ্রিকল, অন্ধ বধু, হাট তার উল্লেখযোগ্য কবিতা। এছাড়াও তার কাব্যগ্রন্থসমূহের মধ্যে আছে- লেখা, রেখা, অপরাজিতা, বন্ধুর দান, জাগরণী, নীহারিকা, মহাভারতী, কাব্যমালঞ্চ, নাগকেশর, পাঞ্চজন্য,পথের সাথী ইত্যাদি। ‘পথের সাথী’ তার রচিত একমাত্র উপন্যাস। ১৯৪৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

কেএসকে/এমএস