কলকাতা প্রতিনিধি:
Advertisement
৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা চলছে সেন্ট্রাল পার্কে। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সপ্তম দিন। এদিন পুরো ভারতে ছুটি। এই ছুটির দিনে কোলকাতা বই মেলায় লোকে-লোকারণ্য। হালকা-শীতে বিকেল হতেই মেলা প্রাঙ্গণে কাতারে কাতারে লোক আসতে শুরু করে।
বিভিন্ন প্রকাশনীর সামনে ভিড় চোখে পড়ার মতো। শুধুই কি বইপ্রেমীদের ভিড়! তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভিড় বাড়ছে বিভিন্ন খাবারের ছোট ছোট দোকানগুলোতেও। সবমিলিয়ে ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় শুধু বইয়ের গণ্ডিতেই আটকে থাকেনি। রোববারের জমজমাটি একটি সার্বিক মেলায় আকার নিয়েছে।
উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে, বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে। ছুটির দিনটিতে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়ন বই প্রেমীদের এতটাই ভিড় যে সেখানে পা ফেলার জায়গা নেই।
Advertisement
গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ দিবসের দিন জোরালো দাবি উঠে আগামী বছর যাতে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন আরও বড় করা যায়।
আরও পড়ুন>বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের পরিসর বাড়ানোর দাবি
বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বই কিনতে এসে অঙ্কুর রায় বলেন, আমি বাংলাদেশের লেখক মারুফ হোসেন, হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ি। হুমায়ুন আহমেদের নাটক কৃষ্ণপক্ষ অসাধারণ। এত ভিড় বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নে ভালো লাগছে, মানুষ বাংলা পড়ছে।
তিনি বলেন, আমার দুই মেয়ে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ে তবু আমি তাদের জন্য দাদা ঠাকুরের বই কিনে দিলাম। আমাদের পছন্দের লেখক হুমায়ুন আহমেদ। তার সব বই পড়েছি।
Advertisement
মেলায় বই কিনতে আসা আর এক বইপ্রেমী মানুষ রঞ্জন ঘোষ জানান, আসলে বাংলাদেশের আর পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির একটা আত্মার টান আছে, মাটির টান আছে। সেই টানেই এখানে আসা। সেই টানেই মনে হয় আজ ভিড়টা বেশি। ফেব্রুয়ারি মাস মানেই একটা ভাষার মাস। ভাষার জন্য একটা দেশের স্বাধীনতা এটা একটা বাঙালি হিসেবে আমার কাছে গর্বের।
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার চাকদাহ থেকে আসা মৌসুমী সরকার দাস বলেন, আমি এই প্রথম বইমেলায় আসলাম, আমি শুনেছিলাম বাংলাদেশ স্টলে খুব ভালো বাংলা বই পাওয়া যায়। ভেতরে ঢুকলাম অনেক বই প্রচন্ড ভিড় কিন্তু আমার বাচ্চাদের জন্য দুটো বই কিনলাম। বাংলাদেশের হুমায়ূন আহমেদ হচ্ছে আমার প্রিয় লেখক। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এসে ভালো লাগছে।
অপরদিকে এবারের কলকাতা বইমেলায় হারিয়ে যাওয়া নস্টালজিয়াকে ফিরে পেতে সুলেখা কালির দেখা মিললো। স্বাধীনতার আগে থেকেই সুলেখা কালির আবির্ভাব। বলপেনের দাপটেই এই সুলেখা কালীর পাততাড়ি ঘটাতে হয়েছিল বাঙালি এই নস্টালজিয়াকে। ফের কয়েক বছরের মধ্যেই আবার ফিরে আসে এই বাঙালির নস্টালজিয়া সুলেখা কালি।
এবার সেই সুলেখা কালিকেই দেখা গেলো ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলাতে। স্টলের বাইরে সাজিয়ে রাখা থরে থরে কালীর বাক্স। কোনো কোনো কালির বক্সে আঁকা জাতীয় পতাকা।
সুলেখা কালীর মার্কেটিং দায়িত্বে থাকা সঞ্জয় দত্ত বলেন, আমরা যতটা আশা করেছিলাম তার থেকে ভালো হচ্ছে। অন্য সময় কাউন্টার থেকে পুশ করতে হয় এখানে সেই ব্যাপারটা নেই। আগে যেমন কালি ঢালতে গিয়ে অনেকেই কালি ফেলে দিত সেই ফিলিংসটা আমরা কনভার্ট করে নিয়ে এসেছি যাতে সহজেই কালিটা ভরা যায়। প্রচুর বয়স্ক মানুষেরা আসছেন আমাদের এই পেন ও কালি নেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি সবাই সহযোগিতা করলে আবার সুলেখা কালি ঘুরে দাঁড়াবে। দীর্ঘ ২২ বছর বন্ধ থাকার পর আবার আমাদের এই কালি পুনরায় এসছে। যেহেতু এই কালিটার মার্কেটে হঠাৎ করে চাহিদা দেখা দিয়েছে, তাই আমরা আবার ফিরে এসেছি।
এমএসএম