দেশজুড়ে

রানি এলিজাবেথের ভ্রমণ করা বিলাসবহুল রেলকোচ এখন ‘জাদুঘর’

কাঠের বিলাসবহুল রেলওয়ে প্রেসিডেন্ট সেলুন কোচে ভারতবর্ষ ভ্রমণ করেছিলেন ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথ। ১৯২৭ সালে তৈরি করা ঐতিহাসিক কোচটি এখন নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় রাখা আছে। অনুমতিক্রমে এটি দেখারও সুযোগ আছে সর্বসাধারণের।

Advertisement

১২৬৫ নম্বর এ প্রেসিডেন্ট রেল সেলুন কোচের ভেতরে প্রবেশ করতেই যেন মনে হবে আধুনিক বাসভবন। প্রবেশ দ্বারেই আছে কোচটির ইতিহাস সংবলিত একটি ওয়াল বোর্ড। তার সামনেই একটি কামরা। সামনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে প্রেসিডেন্ট কনফারেন্স রুম। সেখানে কাঠের বানানো নকশাগুলো নজর কাড়বে সবার।

কনফারেন্স রুম পেরিয়ে দুই বিছানার একটি বেড রুম। সেখানে আছে সাজসজ্জার জন্য আয়না ও বসার স্থান। বেডরুমের পাশেই তৎকালীন আধুনিক বাথরুম, বেসিন, ও ঝরনাও আছে। ঐতিহাসিক এ কোচটির কনফারেন্স রুমসহ কয়েকটি স্থান ছিল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। তবে এসি অচল থাকলেও এত বছর পরও সচল আছে ফ্যানগুলো। তখনকার লাইটগুলো নষ্ট, তাই নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে। কোচটিতে একটি স্টাফ বেড রুমও আছে। সেখানেও সুসজ্জিত থাকার ব্যবস্থা ও এটাস্ট বাথরুম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশ ভাগের পর ব্রিটিশ সরকার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রেলওয়েকে এ সেলুন কোচটি উপহার হিসেবে দিয়ে যায়। এরপর থেকে এটি শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতির জন্য সংরক্ষিত থাকায় এর নাম হয় রেলওয়ে প্রেসিডেন্ট সেলুন। স্বাধীনতার পর অনেক রাষ্ট্রপতি ভ্রমণ করেছেন এ ট্রেনে। সর্বশেষ এ কোচটি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ব্যবহার করেন। কিন্তু ১৯৮১ সালে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় মেরামতের জন্য আনা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়।

Advertisement

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ ইনচার্জ মোমেনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এটি ১৯২৭ সালে ব্রিটিশ নির্মিত বিশেষায়িত একটি কোচ। এ কোচটার বৈশিষ্ট্য হলো ভেতরের ডেকোরেশন সম্পূর্ণ কাঠের। আমরা এটা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হিসেবে রেখে দিয়েছি। অনুমতিক্রমে এটি দেখার সুযোগ আছে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ডিভিশনাল সুপারিন্টেনডেন্ট সাদেকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সর্বপ্রথম রানি এলিজাবেথ এ সেলুনে ভ্রমণ করেন। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট সেলুন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি চলাচলের অনুপযোগী হলে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, এটি জাদুঘরে স্মৃতি হিসেবে থাকবে। এখন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় এটি আমরা মেইনটেন করে আসছি।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে যদি বড় কোনো জাদুঘর করা হয়, সেখানে রাখা হবে।

এসজে/এমএস

Advertisement