অর্থনীতি

ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প : প্রযুক্তিগত সহায়ক কমিটি গঠনের নির্দেশ

আগামী ১জুলাই থেকে কার্যকর হচ্ছে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প। ভ্যাট ই-পেমেন্ট কার্যক্রম নিরাপদ, সাইভার ক্রাইমমুক্ত করতে সব ব্যাংকের আইটি বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে কোয়ালিশন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। আজ বুধবার রাজধানীতে এনবিআর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সরকারের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভিাগের সচিব ড. এম আসলাম আলমের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করতে তিনি ওই নির্দেশ দেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।    ইন্টারনেট ভিত্তিক নতুন এ পদ্ধতির ব্যবহার বিষয়ে ‘ভ্যাট ই-পেমেন্ট ইন্টিগ্রেশন উইথ আইবিএএস (ইন্টিগ্রেটেড বাজেটিং অ্যান্ড এইড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের) শীর্ষক সেমিনারে আয়োজন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এম আসলাম আলম বলেন, যে কোন কিছু নতুন শুরু করতে গেলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এনবিআর ভ্যাট আদায়ে যে পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে, এতেও সমস্যা হতে পারে। সফটওয়ারের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যারা এর অপারেট করবেন তাদের এ বিষয় ধারণা নাও থাকতে পারে, সে জন্য সমস্যা আরও জটিল হতে পারে। ফলে বিশ্বব্যাপি সাইভার সিকিউরিটির যে সমস্যা হচ্ছে তার কবলে এ পদ্ধতিও পড়বে, এ ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। তাই সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় রাজস্ব বোর্ডকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এর জন্য একটি কোয়ালিশন কমিটি গঠন করা দরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এর প্রধান হবেন এবং অন্যান্য ব্যাংকের আইট বিভাগের কর্মকতারাগণ এ কমিটিতে থাকবেন। যাদের কাজ হবে গ্রাহক সুরক্ষা দেয়া। ভ্যাট পেমেন্টের সঠিক পদ্ধতির জ্ঞান রাখা।   প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর ড. আতিউর রহমান সচিব এম আসলাম আলমের এ বক্তব্য সমর্থন করে ডেপটি গভর্নর নাজনীন সুলতাকে প্রধান করে জরুরি ভিত্তিতে এ সংক্রান্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন। এ কমিটিতে সরকারী হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রতিনিধি রাখতে বলা হয়েছে। গভর্নর বলেন, বর্তমানে মূসক ব্যবস্থাপনার প্রায় সব কাজ ম্যানুয়ালি সম্পাদিত হয়। এতে গ্রাহকদের ভোগান্তি এবং সময়ক্ষেপণের পাশাপাশি জটিলতাও রয়েছে। কিন্তু নতুন এই ব্যবস্থায় করদাতাগণ নিজেরাই তাদের অধিকাংশ কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।এতে হয়রানি বন্ধের পাশাপাশি ভ্যাট পরিশোধ ব্যবস্থাও সহজ ও স্বচ্ছ হবে । তিনি বলেন, আগামী ১জুলাই থেকে নতুন মূসক আইন কার্যকর হচ্ছে। এ আইন কার্যকর করার জন্য পুরো প্রক্রিয়াকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে প্রথম মূসক দাখিলপত্র অনলাইন সিস্টেমে গ্রহণ এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অটোমেশন প্রক্রিয়া তথা অনলাইন নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হবে। এ সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশের মূসক ব্যবস্থার যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে সম্পাদন করা হবে। বর্তমানে মূসক ব্যবস্থার প্রায় সব কাজ সনাতন পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু এই ব্যবস্থা চালু হলে ভ্যাট নিবন্ধন, ভ্যাটের ফরম পূরণ ও জমা দান, নির্ধারিত ভ্যাট পরিশোধ সবকিছু অনলাইনের মাধ্যমে করা যাবে ।বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ ধরণের যে কোন উদ্যোগকে আমরা পূর্ণ সমর্থন যোগাবো এবং প্রয়োজনীয় সকল সহযোগীতা প্রদান করবো। সরকারী হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক একযোগে একে অপরের সহযোগীতায় যে কোন উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনসাধারণকে প্রদত্ত সেবায় প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বোত্তম মানে উন্নীত করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি । এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ, কন্ট্রোলার জেনারেল অফ একাউন্টস মো. আবুল কাশেম।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আইআরডির সেক্রেটারি এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ব্যারিস্টার জাহাঙ্গির হোসনে।এসআই/এবিএস