দেশজুড়ে

নরসিংদীতে চাঁদা না দেয়ায় দুইজনকে গুলি করে হত্যা

নরসিংদীতে চাঁদা না দেয়ায় সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ীসহ ২ যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে। বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নরসিংদী পৌর শহরের ভাগদী এলাকার ২ নম্বর সেতু সংলগ্ন বালু মাঠে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় শহরজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।নিহতরা হলেন, ভাগদী এলাকার মোরশেদ খন্দকারের ছেলে রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী খোকন খন্দকার (৩২) ও একই এলাকার মতিন খন্দকারের ছেলে আরিফ খন্দকার (৩০)।নিহত খোকনের বড় ভাই সেলিম খন্দকার জানায়, তার নিকট আত্মীয় সদর উপজেলার আলোকবালী এলাকার প্রবাসী সফিকুল ইসলাম এক বছর আগে শহরের ভাগদী বালুর মাঠ এলাকায় জমি কেনেন। সম্প্রতি সেখানে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করলে চৌয়ালা এলাকার কয়েকজন সন্ত্রাসী চাঁদা দাবি করেন। সফিকুল ইসলাম ঘটনাটি আত্মীয় খোকন খন্দকারকে জানায়। সন্ধ্যায় চাঁদাবাজরা ঘটনাস্থলে গেলে সফিক খন্দকার ফোন করে অাত্মীয় সেলিম খন্দকারকে জানায়। সেলিম তার ছোটভাই ব্যবসায়ী খোকন ও নিকটতম বন্ধু আরিফকে সেখানে পাঠায়। সেখান তাদের সঙ্গে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে বাড়ি থেকে তারা বের হলে ২নং সেতু সংলগ্ন বালু মাঠে তাদেরকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে।জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমান বলেন, নিহত খোকন খন্দকারের পেটের বাম পাশে ও আরিফের পিঠের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এতে ভিতরে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়। ফলে হাসপাতালে আনার পূর্বেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।খবর পেয়ে রাতে জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে লাশের পাশে কাঁদছে স্বজনরা। তাদের কান্নার শব্দে ভারি হয়ে উঠেছে পরিবেশ। আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি এলাকার লোকজন নিহতদের লাশ দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসেন। তাদের কোনো স্বান্তনাই থামছেনা স্বজনদের আহাজারি। খবর পেয়ে নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল হাসপাতালে গিয়ে নিহতের স্বজনদের স্বান্তনা দেয়। ওই সময় স্বজনরা মেয়রের কাছে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানায়।নিহত খোকন খন্দকারের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে ছোট ছেলের বয়স মাত্র এক বছর। তাই স্বামী নিহত হওয়ার পর থেকে থামছেনা স্ত্রী ঝুনু বেগমের আহাজারি। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার শিশু সন্তানদের কি বলে বুঝ দেব। তারা বাবাকে খুঁজলে আমি কি বলবো। এখন আমি তাদের নিয়ে কোথায় যাব। কেন তারা আমার স্বামীকে মেরে চারদিক অন্ধকার করে দিল।নরসিংদী শহরে ডাকাতির সঙ্গে ঘটছে একের পর হত্যা। আইনশৃঙ্খলার এমন ভয়ানক অবনতিতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শহরবাসী। কিন্তু পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতারে তেমন সাফল্য দেখাতে পারছেনা।নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, নিহতদের স্বজনদের দাবি, চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করতে গিয়ে তারা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে।সঞ্জিত সাহা/এমএএস/এমএস