দেশজুড়ে

ফরিদপুরে বেইলি ব্রিজে মেরামত কাজে বন্ধ চলাচল, দুর্ভোগ চরমে

রমজানের শুরুতেই ফরিদপুরের সবচেয়ে ব্যস্ততম আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে ব্রিজের ওপর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চলাচল। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জনগণের স্বার্থেই সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। আরও কয়েকদিন চলবে এ কাজ। ফলে এই কয়েকদিন শহরবাসীকে যাতায়াতে একটু সমস্যা পোহাতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরবাসীর নিত্যদিনের যাতায়াতের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত এই ব্রিজটি ১৯৩৫ সালে নির্মিত হয়। তৎকালীন জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান চৌধুরী কুমার নদের ওপর প্রথম এই সেতু নির্মাণ করেন। লোহার পিলারের ওপর পাথরের ঢালাইয়ের এই সেতুটি ১৯৮৮ সালের বন্যায় ধসে যায়।

কুমার নদের ওপরে মুজিব সড়কে স্থাপিত ব্রিজটির এক প্রান্তে ফরিদপুরের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হাজি শরিয়তুল্লাহ বাজার এবং অন্য প্রান্তে নিউমার্কেট ও তিতুমীর বাজার এলাকা। শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত কুমার নদের এই ব্রিজ দিয়ে একসময় যান ও মানুষ চলাচল করলেও ৮৮ এর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল। এরপর শুধু পায়ে হেঁটেই চলাচল হচ্ছে ব্রিজটি দিয়ে। সেখানে আবার একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণের পর ২০১২ সালে তা দুর্ঘটনায় ধসে যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা

এরপর ফরিদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে কুমার নদের ওপর ৯১ মিটার দৈর্ঘ্যের আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজ সংস্কার করে মানুষ চলাচলের ব্যবস্থা করে। শহরের মানুষ প্রয়োজনে এই পথে চলাচল করে।

সাধারণ বাসিন্দাদের দাবি, বেইলি ব্রিজটি অপসারণ করে সেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্রিজ নির্মাণ করা হোক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমার নদের এই বেইলি ব্রিজে চলাচল বন্ধ করে সেখানে মেরামত কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। বুধবার থেকে শুরু হয় মেরামত কাজ। কাজ শেষ হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। ব্রিজটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সেখানে বিকল্প হিসেবে নৌকা চলাচল শুরু হয়েছে। আবার কেউবা ঝুঁকি মাথায় রেখে হেঁটে পাড় হচ্ছেন ব্রিজটি। শহরের মানুষ সাধারণত হাজি শরিয়তুল্লাহ বাজারে যেতে আলীপুর-গোয়ালচামট পথে আলীমুজ্জামান বড় ব্রিজ কিংবা পূর্ব খাবাসপুর-রথখোলা পথের জোড়া ব্রিজ ব্যবহার করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেলো দুই বন্ধুর

শহরের ঝিলটুলীর বাসিন্দা মোজাম্মেল হক মিঠু জাগো নিউজকে বলেন, ব্রিজ দিয়ে চলাচল বন্ধ থাকায় বাজারে যেতে আমাদের অনেক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। আর শহরের মধ্যে একমাত্র মাছ বাজারটি হাজি শরিয়তুল্লাহ বাজারেই।

শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা শামীম হোসেন ও মুন্সিবাজারের সোহেল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ফরিদপুরের এই বেইলি ব্রিজ তুলে সেখানে স্থায়ীভাবে পাকা ব্রিজ করা হলে শুধু চলাচলেরই সুবিধা হবে না, বরং হাজি শরিয়তুল্লাহ বাজারে প্রবেশমুখ হতে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে ভাঙা রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কে যানজট নিরসন হবে।

ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সোহেল জাগো নিউজকে বলেন, বেইল ব্রিজটি সরিয়ে সেখানে বড় ব্রিজ করে ওয়ানওয়ে করে দেওয়া উচিত। এতে করে র‌্যাফেলস ইন মোড় থেকে জনতা ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত ফুটপাত দখলমুক্ত হবে এবং মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, প্যানেলে জং পড়ে গেছে। এছাড়া আরও কিছু সংস্কার কাজ করতে হবে। চার পাঁচদিন লাগবে মেরামত শেষ হতে।

এন কে বি নয়ন/জেডএইচ/