বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রস্তাবিত এক প্রকল্পে পরামর্শক ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ২৫৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ৫২ কিলোমিটার ‘চট্টগ্রাম-দোহাজারী মিটার গেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজ রূপান্তর’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধেই প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে পাঠানো হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি নিয়ে ৯ এপ্রিল প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। পিইসি সভায় সভায় সভাপতিত্ব করবেন কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ৭ হাজার ৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩ হাজার ৮ কোটি এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ থেকে ৪ হাজার ৬৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
আরও পড়ুন: ৪৯ কোটির অনুদানে পরামর্শক ব্যয় ৮ কোটি, কমিশনের বাগড়া
সূত্র জানায়, দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ রেলপথগুলোকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত মিটার গেজ রেলপথ থাকলেও নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করা হবে। পাশাপাশি ফৌজদারহাট থেকে একটি কার্ভ বা কর্ডলাইন নিয়ে ষোলশহর রেলস্টেশনে যুক্ত করা হবে। ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত একটি কর্ডলাইনও নির্মাণ করা হবে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি রেলপথ চলে যাবে কক্সবাজার পর্যন্ত। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে আসা ট্রেনগুলোর শেষ গন্তব্য চট্টগ্রাম স্টেশন হওয়ায় সাইডিং লাইনে ট্রেন কক্সবাজারে যেতে সময়ক্ষেপণ হবে। এজন্য নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ফৌজদারহাট থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার কর্ডলাইন নির্মাণ করে ষোলশহর স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা চলছে। এজন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে রেলওয়ে।
আরও পড়ুন: টাকা খরচে ধীরগতি, ৮ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন মাত্র ৩২ শতাংশ
দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ৯৯ দশমিক ৩ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৯৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। অর্থাৎ প্রকল্পের আওতায় মোট ১২৭ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার সিংগেল লাইনকে ডুয়েল গেজ ট্রাক নির্মাণ করা হবে, যা পরে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে। এছাড়া রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সুবিধা আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন কাজে বৈদেশিক ঋণের পালে হাওয়া
প্রস্তাবে রেলপথ মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার (নির্মাণাধীন) রেল করিডরের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল করিডরের সংযোগ স্থাপন হবে। ফলে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পর্যটকদের নিরবচ্ছিন্ন রেল সেবা দেওয়া যাবে। প্রকল্পটি শেষে উচ্চ গতিসম্পন্ন, নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী ভ্রমণ সম্ভব হবে। ফলে ভ্রমণ সময় কমে যাবে প্রায় ৬০ শতাংশ। এছাড়া চট্টগ্রাম-দোহাজারী সেকশনে বর্তমানে একটি তেলের গাড়ি ও দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। কিন্তু প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে ৫২টি ট্রেন পরিচালনা সম্ভব হবে।
এমওএস/জেএইচ/জেআইএম