দেশজুড়ে

দুর্ভোগের নাম বেইলি ব্রিজ

ফরিদপুর শহরের ব্যস্ততম আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজটির স্থানে স্থায়ীভাবে একটি বড় সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ফরিদপুরবাসী। তাদের দাবি, শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বেইলি ব্রিজটি দিয়ে বর্তমানে শুধু পায়ে হেঁটে চলাচল করা যায়। এখানে বড় সেতু নির্মাণ করা হলে যানবাহনও চলাচল করতে পারবে। এতে নদীর দুই প্রান্তের ব্যস্ততম এলাকার মানুষের যেমন উপকার হবে, তেমনি কমবে যানজট।

চলতি রমজানের শুরুতে আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজে মেরামত কাজ শুরু হলে সেখানে বড় সেতু নির্মাণের দাবি তোলেন শহরবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার বিস্তৃত মুজিব সড়কটি সোজাসুজি লম্বাভাবে চলে গেছে টেপাখোলা লেকপাড় পর্যন্ত। সড়কটির মাঝে আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজটি কুমার নদের ওপরে অবস্থিত। অবশ্য আগে এটি বেইলি ব্রিজ ছিল না। পুরোদস্তুর ব্রিজ হিসেবেই এটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৩৫ সালে। পরে ১৯৮৮ সালের বন্যায় ব্রিজটি ধসে পড়লে এখানে বিকল্প হিসেবে বেইলি ব্রিজ তৈরি করে শুধুমাত্র পাঁয়ে হেটে চলাচলের উপযোগী করা হয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, কুমার নদের ওপরে মুজিব সড়কে নির্মিত ব্রিজটির এক প্রান্তে ফরিদপুরের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার এবং অন্য প্রান্তে নিউ মার্কেট ও তিতুমীর বাজার এলাকা।

স্থানীয়রা জানান, ২০১২ সালের অক্টোবরে রাতের আঁধারে একটি ট্রাক বেইলি ব্রিজের ওপরে উঠে গেলে ব্রিজটি আবারও ধসে যায়। এরপর ফরিদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি আবারও সংস্কার করে। ব্রিজটির ওপর দিয়ে শুধু পায়ে হেঁটে চলাচল করা যায়। কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না।

শহরের বাসিন্দা দাউদ আকন্দ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বেইলি ব্রিজটির দুই প্রান্তে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। শহরের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনে এ পথে চলাচল করেন। আমাদের দাবি, বেইলি ব্রিজটি অপসারণ করে সেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণ করা হোক।’

শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা শামীম হোসন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ফরিদপুরের এ বেইলি ব্র্রিজটি অপসারণ করে সেখানে স্থায়ীভাবে বড় সেতু নির্মাণ করা হলে শুধু চলাচলেরই সুবিধা হবে না; বরং হাজী শরীয়তুল্লহ বাজারে প্রবেশমুখ থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে ভাঙ্গা রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কের যানজট স্থায়ীভাবে নিরসন হবে।’

ঝিলটুলীর বাসিন্দা মোজাম্মেল হক মিঠু বলেন, ‘হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজারে যেতে এ ব্রিজটি প্রতিদিনই পারাপার হতে হয়। বাজার থেকে মালপাত্র হাতে করে টেনে আনতে না পেরে উল্টো পথে রিকশায় চড়তে হয়। ব্রিজটি বড় হলে আমাদের এসব ভোগান্তির অবসান হতো।’

শহরের পূর্ব খাবাসপুরের বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, বেইল ব্রিজটি সরিয়ে সেখানে বড় সেতু করা হলে গোয়ালচামট হাজরাতলার মোড় থেকে জনতা ব্যাংকের মোড় পর্যন্ত ফুটপাত দখলমুক্ত হবে। মানুষের যাতায়াতও সহজতর হবে।

এ বিষয়ে জানতে ফরিদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, প্যানেলে জং পড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি বেইলি ব্রিজটি মেরামত করে পুনরায় জনচলাচল শুরু করা হয়েছে। তবে এ ব্রিজে যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। আপাতত সেখানে বড় আকারে স্থায়ী কোনো সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেই। তবে বেইলি ব্রিজটি বড় করা গেলে যান চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে।

এন কে বি নয়ন/এসআর/জিকেএস