দেশজুড়ে

অবশেষে জিডি করলেন সেই প্রধান শিক্ষক

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ম্যাকপার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানভীর অবশেষ নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) রাতে হাতিয়া থানায় ওই জিডি (নম্বর-১১১৬) করেন তিনি। এতে তিনি সহকারী শিক্ষিকা জিন্নাত আরা বেগম ও তার বড়ভাই বরখাস্ত সহকারী শিক্ষক হাসান উদ্দিন বিপ্লবকে আসামি করেছেন।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে জাগো নিউজকে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন।

তিনি বলেন, জিডির বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. বখতিয়ার আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম মোবাইলে শিক্ষকদের উপস্থিতি যাচাইকালে শিক্ষিকা জিন্নাত আরাকে অনুপস্থিত পান। তার নির্দেশে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেওয়া হয়।

এর জের ধরে জিন্নাত আরা এবং তার বড়ভাই হাসান উদ্দিন বিপ্লব প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানভীরকে বিভিন্নভাবে ফাঁসানোর অপচেষ্টা এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ যৌন হয়রানির মামলার ভয় দেখাচ্ছেন। এতে নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়রির আবেদন করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ম্যাকপার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন সাতজন। বিদ্যালয়ের পাশেই শিক্ষিকা জিন্নাত আরার বাড়ি। একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসান উদ্দিন বিপ্লব (বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত) তার বড় ভাই, সহকারী শিক্ষিকা খাদিজা খাতুন তার চাচি, শাহেনা বেগম ও মহিমা বেগম তার ফুপু। জিন্নাত আরা ও তার পরিবারের শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে ‘অনৈতিক সুবিধা’ আদায়ে হেরফের হলেই অন্য শিক্ষকদের নানাভাবে হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানভীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাড়ির দরজায় বিদ্যালয় হওয়ায় শিক্ষিকা জিন্নাত আরা ইচ্ছামতো বিদ্যালয়ে আসেন আবার বাড়ি চলে যান। কিছু বললে স্থানীয় মাস্তান দিয়ে হেনস্তাসহ নানা ধরনের ভয় দেখান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর পরও কোনো প্রতিকার হয়নি। এখন তিনি বিদালয়ে ঢুকতে না পেরে ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন।’

এর আগে মামুন উর রশিদ নামে আরেক সহকারী শিক্ষকও একই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গত ২৮ মার্চ থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়রি করেছেন। এসব বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটিসহ অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে গত ৮ এপ্রিল সহকারী শিক্ষিকার ভয়ে ‘তটস্থ’ প্রধান শিক্ষক শিরোনামে জাগো নিউজে সংবাদ প্রকাশিত হলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থার আশ্বাস দেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) ফেরদৌসী বেগম।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা দানাবেঁধে আসছিল। বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। গত ১২ মার্চ সহকারী শিক্ষিকা জিন্নাত আরাকে অনুপুস্থিত দেখানোর পর বিষয়টি সামনে আসে। আমরা এ বিষয়ে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে নিউজ দেখে যথাযথ ব্যবস্থ নেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/জিকেএস