‘দিন বদলে গেছে। মানুষের মানসিকতারও পরিবর্তন হয়েছে। এখন পুরুষের সঙ্গে সব পেশাতে আমরা নারীরা রয়েছি। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছি। অনেক সময় পুরুষ সহকর্মীকে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নাছিমা বেগম। সরকারের প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ সচিব হিসেবে কাজ করছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে।গত রোববার দুপুরে জাগো নিউজ মুখোমুখি হয় সরকারের এই আমলার। নিজ দফতরে কথা বলেন জাগো নিউজের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কথা হয় তার সঙ্গে।নাছিমা বেগম বলেন, আমি নিজেকে ‘নারী সচিব’ মনে করি না। সচিব হিসেবে কাজ করছি। নারী পুরুষ পার্থক্য করার কোনো সুযোগ নেই। ১৯৮৩ সালে সরকারের প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন নাছিমা বেগম। বলেন, ১৯৮৩ সালে মাঠ প্রশাসন দিয়ে পেশাজীবন শুরু করি। প্রথম কর্মস্থল কুমিল্লায়। মাঠ প্রশাসনে কাজ করতে গেলে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সফলভাবেই সব দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি। তাই আজ এতো দূর আসতে পেরেছি।নাছিমা বেগম পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন যেন পেশার প্রস্তুতির সূতিকাগার। সেখান থেকেই শিখেছি। নারী হিসেবে কি ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো চ্যালেঞ্জ দেখি না। সবার কাছ থেকে ভালো সহযোগিতা পেয়েছি। বিশেষ করে যখন হবিগঞ্জে সহকারী কমিশনার হিসেবে কাজ করছি, তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আজও কৃতজ্ঞ। মাঠে কাজ করতে গিয়ে অভিজ্ঞতা কেমন? জানতে চাইলে এই আমলা বলেন, যখন হাকিম হিসেবে আদালতে উঠতাম, আদালতের বারান্দা যেন ভেঙে যাবে অবস্থা। মানুষ দেখার জন্য ভিড় করতে। বলত, ‘নারী বিচারক’। তবে আজ সেই দিন নেই। দিন বদলে গেছে। এখন পুরুষের কাঁধে কাঁধ রেখে নারীরা কাজ করছে। আমিও কাজ করছি। প্রশাসন, আর্ম সার্ভিস, পুলিশ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক এমন কোন পেশা নেই যেখানে আমরা নারীরা কাজ করছি না। এক সময় মনে করা হতো, শারীরিক গঠনের কারণে আমরা পারবো না। তাই আমাদের কাজ করতে দেয়া হতো না। কিন্তু সেটি ভুল প্রমাণ হয়েছে। বাংলাদেশের নারী আজ হিমালয় জয় করেছে। পরিবার সামলে কিভাবে চলেন? প্রশ্নে কিছুটা থেমে গেলেন এই আমলা। বললেন, ভালো প্রশ্ন। সত্যিই কাজটি কঠিন। তবুও নারীকে করতে হয়। আমার জন্য আরো কঠিন, আমার প্রথম সন্তান অটিস্টিক। তাকে সামলে ক্যারিয়ারে এগিয়ে যেতে হয়েছে। নাছিমা বেগম বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে, নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে। এজন্য নানা উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে।এসএ/এসএইচএস/পিআর