দেশজুড়ে

জয়পুরহাটে দুই দিনব্যাপী বারো শিবালয় মেলা শুরু

জয়পুরহাট জেলা সদরের ছোট যমুনা নদীর তীর ঘেঁষা ঐতিহাসিক বারো শিবালয় দেশের সর্ববৃহৎ মন্দির। শিবের বারোটি মন্দির নিয়ে গঠিত বলে তা বারো শিবালয় বা বারো শিব মন্দির হিসেবেই পরিচিতি পেয়ে আসছে প্রায় সাড়ে ৪শ’ বছর ধরে। সদর উপজেলার বেল আমলা গ্রামে কয়েক বিঘা জমির উপর একই উঠানে গা ঘেঁষে পাশাপাশি অবস্থিত শিব ঠাকুরের বারোটি মন্দির। প্রতি বছরের মতো এবারও এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই দিনব্যাপী শিব ঠাকুরের পূজা-অর্চনা। এখানে ভক্তরা আসেন দূর-দূরান্ত থেকে। কামনা করেন নিজেদেরসহ দেশ-জাতির মহাকল্যাণ।  দেশ-বিদেশ থেকে আসা অসংখ্য পূন্যার্থী সমবেত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪শ’ বছরের প্রাচীন এই তীর্থভূমিতে। শিবের মাথায় দুধ-জল ঢেলে আর শিব ঠাকুরের পূজা-অর্চনা করে তার সন্তুষ্টি আদায়ের লক্ষ্যে প্রাণান্ত চেষ্টা তাই পূজারী ও ভক্তদের। তারা চান ধর্ম-বর্ণ মিলেমিশে শান্তিতে এই সুন্দর দেশটিতে বসবাস করতে। এ উপলক্ষে বেল-আমলা বারো শিব মন্দির চত্বরে বসেছে গ্রামীণ মেলা। মিঠাই-মন্ডা, খেলনা, পূজা সামগ্রী, তৈজসপত্রসহ হরেক রকমের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানিরা। আর ঐতিহ্যবাহী নাগরদোলা, চরকী দোলাসহ শিশু-কিশোরদের নানা বিনোদন ব্যবস্থা মেলাকে যেন সাজিয়েছে ভিন্ন এক সাজে। বগুড়ার কাহালু থেকে আসা স্বপন চন্দ্র ও দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থেকে আসা রাখাল চন্দ্র বলেন, আমরা শিব ঠাকুরের সন্তটির জন্য এখানে প্রত্যেক বারই আসি, কিন্ত দুইদিনের পূজা থাকলেও থাকার ব্যবস্থা না থাকায় আমরা একদিনেই পূজা করে চলে যায়। বারো শিবালয় মন্দির কমিটির সভাপতি তারা চাঁদ বাজলা জানান, জয়পুরহাটের ঐতিহ্যবাহী এই বারো শিবালয় মন্দির ঐতিহাসিকভাবে প্রসিদ্ধ হলেও তা গুরুত্ব পায়নি এখনো। প্রতি বছর দেশ-বিদেশের তীর্থ যাত্রী, ভক্ত আর পূজারীদের পদভারে এই বারো শিব কম্পিত হলেও সরকারি সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ মন্দির কমিটির। এতো সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এখানে এখনো গড়ে উঠেনি পর্যটন কেন্দ্র। ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ দেশের এই একমাত্র বারো শিবালয় মন্দিরটির সমস্যার সমাধান আর সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পাওয়া গেলে জয়পুরহাটের এই মহাপূণ্য স্থানটি হতে পারে উপ-মহাদেশসহ বিশ্বের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। আর এটাই বিশ্বাস এখানকার সর্ব সাধারণের।রাশেদুজ্জামান/এসএস/পিআর