জাতীয়

চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক: মানবাধিকার কমিশন

সম্প্রতি গণমাধ্যমে ‘আইসিইউর জন্য ‘লড়াই’ বাঁচেননি মানিক’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সোমবার (৩০ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে জাতীয় মানবধিকার কমিশন বলেছে, যথাযথ চিকিৎসা সেবা না পেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক।

কমিশন মনে করে, কোনো মানুষই যেন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ না করে, সে বিষয়ে স্বস্তিদায়ক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

কমিশন জানায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের তিন দিন পর গত ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার রাজধানীতে ফাঁকা রাস্তায়দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের চাপায় গুরুতর আহত হন রিকশাচালক মো. মানিক হোসেন (৩৩)। তাকে ঢাকামেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, আহত মানিককে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নিতে হবে। কিন্তু হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি নেই। ওই সময় একজন চালক উপযাজক হয়ে বলেন, তিনি এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবেন, সেখানে আইসিইউ শয্যা খালি আছে। চালকের কথা মতো ছেলেকে নিয়ে শান্তিবাগে ‘বিএনকে হসপিটাল লিমিটেড’ নামে একটি হাসপাতালে নিয়ে যান পিতা শাহীন মৃধা। স্বজনদের অভিযোগ মঙ্গল ও বুধবার দুই দিন ওই হাসপাতালে মানিক থাকলেও সেখানে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না।

আরও পড়ুন: ‘সুষ্ঠু তদন্ত ও গাফিলতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে’ 

অতঃপর নারী উদ্যোক্তা জনৈক তাসলিমা মিজির চেষ্টায় বিএনকে হসপিটাল লিমিটেডের ৭১ হাজার টাকা বিল পরিশোধ এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে একটি শয্যার ব্যবস্থা হয়। তবুও মানিককে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। গত ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

বিবৃতিতে কমিশন জানায়, গুরুতর রোগীর প্রাণ বাঁচানোর লড়াইয়ে প্রতি সেকেন্ড যেখানে মহামূল্যবান, সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ভুক্তভোগী মানিককে নিয়ে ঘুরেছেন স্বজনেরা। কোনো মানুষই যেন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ না করে, সে বিষয়ে স্বস্তিদায়ক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

এতে আরও বলা হয়, মৃত্যুবরণকারী মানিকের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করা, হাসপাতালের পক্ষে তাকে জরুরি সেবা দিয়ে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার অন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব ছিল কি-না সে বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যাখ্যা প্রদান, দেশে কতটি সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সমৃদ্ধ চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে, সাধারণ মানুষের আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে কী ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে- এসব বিষয় উল্লেখ করে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবকে বলা হয়।

এসএম/এমএইচআর/জিকেএস